দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নাম তার সোনু কুমার চৌহান। পাঞ্জাব প্রদেশের লুধিয়ানা থেকে তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সাইকেলে করে বাড়ির পথে রওয়ানা হয়েছিলেন বিয়ের উদ্দেশে। কিন্তু সেই বিয়ে আর করা হলো না! কিন্তু কেনো?
তিনি যখন বিশাল এক পথ সাইকেলে পাড়ি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন তখনও জানতেন না যে, তার কপালে কি রয়েছে। বিয়ের জন্য সাইকেলে করে বাড়ি ফিরতে চাওয়া ওই তরুণ বর্তমানে ঘরবন্দি জীবন যাপন করছেন।
সোনু কুমার চৌহানের বাড়ি ভারতের নেপাল সীমান্তবর্তী একটি জেলায়। বাড়ি পৌঁছাতে যখন আর মাত্র ১৫০ কিমি পথ বাকি তখনই পড়লেন বিপদে। করোনা মোকাবিলায় ভারতজুড়ে লকডাউন বিদ্যমান। তাই সোনু ও তার তিন বন্ধুকে সীমান্তরক্ষী বাহিনী যাত্রাপথেই আটকে দিলেন। শুরু করলেন জিজ্ঞাসাবাদ। তারপর তাদের সকলকে পাঠিয়ে দিলেন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে।
প্রাঞ্জাবের লুধিয়ানা হতে সোনু কুমার চৌহানের বাড়ির দূরত্ব প্রায় এক হাজার কিলোমিটার। লকডাউনের মধ্যেও টানা ৭ দিন সাইকেল চালিয়ে বন্ধুদের নিয়ে ৮৫০ কিমি পথ পাড়িও দিয়েছিলেন। তবে তার বিয়ের সেই সুযোগ আর হলো না। বর্তমানে ভারতের লকডাউন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাকে থাকতে হবে ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই।
পেশায় পাঞ্চাবের লুধিয়ানার একটি টাইলস কারখানার কর্মী সোনু কুমার চৌহান সেখান থেকে হাজার মাইল দূরে উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার পিপড়া রসুলপুরের বাসিন্দা। বাড়ি থেকে তিনি যখন মাত্র দেড়শ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলেন তখনই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে বন্ধুদের সঙ্গে ধরা পরেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতি পড়ে হতাশ সোনু জানিয়েছেন, ‘কোনোভাবে আর মাত্র দেড়শো কিমি পথ পাড়ি দিতে পারলে বাড়ির এলাকায় ঢুকে যেতে পারলেই কেও আর আটকাতে পারতো না আমাকে। তবে আর কি করার, কপালটা খারাপ। ধরা পড়ে গেলাম। বিয়ে তো হলই না, তার ওপর এখন এভাবে এই সেন্টারে থাকতে হচ্ছে।’
অবশ্য তিনি বলেন, ‘বিয়ে তো পরেও হতে পারে। আগে সবার সুস্থতাই বেশি জরুরি।’ বলরামপুরের এসপি দেবরঞ্জন ভার্মা জানিয়েছেন যে, ‘বন্ধুদের নিয়ে চৌহান জেলায় প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের থামানো হয়। এখন তারা কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রয়েছেন। ১৪ দিন পর করোনা পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ আসলে তবেই তাদের চারজনকেই ছেড়ে দেওয়া হবে।’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।