দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যুর আগে প্রচুর ঘুমের বড়ি খেয়েছিলেন মিতা নূর। একজন ব্যক্তি যদি এতো ঘুমের বড়ি খাই তাহলে সে ওই নিস্তেজ শরীর নিয়ে কিভাবে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলেছে- সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জনপ্রিয় টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মিতা নূরের মৃত্যু নিয়ে রহস্য এখনও কাটেনি। বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তের পর অধিকতর রাসায়নিক পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে এক নতুন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মিতা নূর ফাঁসি দেয়ার আগে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করেছিলেন। এতেই তার দেহ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। যে পরিমাণের ওষুধ তিনি সেবন করেছেন- তারপর কোনো মানুষ স্বাভাবিক থাকার কথা নয়। তাহলে তিনি কিভাবে নিজ চেষ্টায় ফাঁসিতে ঝুললেন।
সংশ্লিষ্ট তদন্তকারীদের দেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, এখন তারা ফরেনসিক রিপোর্টের অপেক্ষা করছেন। ঘুমের ওষুধ সেবনের মাত্রা কতটুকু এবং সেই মাত্রার ওষুধ সেবনের পর তা তার দেহকে নিস্তেজ করে দিতে কী পরিমাণ সময় নিয়েছে এবং সেই সময়ের মধ্যে তিনি তার দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলাতে সক্ষম হয়েছিলেন কি না তা এ পরীক্ষার মধ্য দিয়েই বেরিয়ে আসবে। আর এ তথ্য থেকেই নিশ্চিত হওয়া যাবে যে মিতা নূরের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড। তবে তদন্তকারীদের প্রায় সবাই এখনো এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবেই বিবেচনা করছেন।
জানা গেছে, এ মুহূর্তে তাদের তদন্তের প্রধান বিষয় মিতা নূরের মৃত্যুর নেপথ্য ঘটনা। তিনি যদি আত্মহত্যা করে থাকেন তবে কার বা কাদের প্ররোচনায় তিনি বাধ্য হয়েছেন, এমন কী ঘটনা ঘটেছিল- এসবই খুঁজে বের করতে চাচ্ছেন তদন্তকারীরা।এদিকে মিতা নূরের মৃত্যুর জন্য তাদের দাম্পত্য কলহ, পরকীয়া ও অনৈতিক জীবন যাপনের কথা উঠলেও এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডের কোনো অভিযোগ ওঠেনি। তবে আত্মহত্যার প্ররোচনা বা বাধ্য করার জন্য স্বামী শাহানুর রহমান রানাকে দায়ী করা হচ্ছে মিতা নূরের বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে। অপর দিকে মিতা নূরের ছেলে সেজাত নূর তাউশ ওরফে প্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার আব্বুকে নিয়ে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। আম্মুকে নিয়েও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রিয় দাবি করেন, বাবার সাথে ঝগড়া করে অভিমান করেই তার মা আত্মহত্যা করেছেন।
তবে মিতা নূরের ভিসেরা রিপোর্ট আরো এক মাস লাগতে পারে। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসার পরই জানা যাবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই সাবিনা ইয়াসমিন ওরফে মিতা নূরকে (৪২) তার গুলশানের নিজ ফ্যাটে ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলতে দেখা যায়। স্বামীর দেয়া সংবাদের সূত্র ধরে গুলশান থানা পুলিশ ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তথ্যসূত্র: দৈনিক নয়াদিগন্ত