দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার নতুন গবেষণা এমন এক তথ্য বেরিয়ে এসেছে যে, বিশ্বের জনসংখ্যা ২০৬৪ সাল নাগাদ পৌঁছাবে ৯৭০ কোটিতে। তারপর কমতে কমতে বর্তমান শতাব্দীর শেষের দিকে গিয়ে দাঁড়াবে ৮৮০ কোটিতে।
এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, কীসের ভিত্তিতে এমন পূর্বাভাস দিলেন গবেষকরা? গবেষকদের যুক্তি হলো, নারীদের আরও অধিকতরহারে শিক্ষা অর্জন ও গর্ভনিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কারণে জনসংখ্যা একেবারে কমে আসবে।
বর্তমান হারে (প্রতি নারীর সক্ষমতা ২ দশমিক ১) জনসংখ্যা বাড়তে যে জন্মহার লাগবে ২১০০ সাল শুরুর সময় বিশ্বের ১৯৫টি দেশের মধ্যে ১৮৩টিরই সেই সক্ষমতা আর থাকবে না। ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিনের ইনস্টিটিউব ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড এভালুয়েশন-এর গবেষকরা এই তথ্য দিয়েছেন।
গবেষকরা বলেছেন যে, জাপান, থাইল্যান্ড, ইতালি এবং স্পেনের মতো অন্তত প্রায় ২৩টি দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে আসবে। যদিও সাব-সাহারা অঞ্চলে এই জনসংখ্যা তিনগুণ হয়ে যাবে এবং বর্তমান শতাব্দীশেষে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই হবে আফ্রিকা মহাদেশে।
সম্প্রতি ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত স্টাডিতে আরও বলা হয়েছে, ভারত ও চীনসহ কিছু দেশে নাটকীয়ভাবে কর্মজীবী জনসংখ্যা কমে আসবে, যে কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এছাড়াও শ্রমশক্তি ও সামাজিক সহযোগিতার পদ্ধতিতে নেতিবাচক প্রভাবও পড়বে। মৃত্যুহার কমে আসবে এবং গড় আয়ু বাড়বে, যে কারণে ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ হবে অন্তত ২৩৭ কোটি, একই সময় ২০ বছরের কম বয়সী মানুষ থাকবে ১৭০ কোটির মতো। ৮০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ ৬ গুণ বেড়ে ১৪১ মিলিয়ন হতে ৮৬৬ মিলিয়নে পৌঁছাবে। আর ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমে তা হবে ৪০১ মিলিয়ন।
গবেষকরা বলেছেন যে, জন্মহার কমে গেলেও, জনসংখ্যা সংকোচনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য নিয়ে আসবে অভিবাসন বিষয়টি। বিশেষকরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার মতো দেশ।
গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী ড. ক্রিস্টোফার মারে বলেন, ‘১৯৬০ সাল হতেই বিশ্বে তথাকথিত জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ঘটেই চলেছে। তবে সহসাই আমরা একটি সন্ধিক্ষণের দেখা পাবো, যখন বিশাল রূপান্তরের মধ্যদিয়ে জনসংখ্যা খুব বেশি হতে খুব কম হওয়া শুরু করবে।’
‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিস স্টাডি ২০১৭’ হতে এক তথ্যে গবেষকরা বলছেন, জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি সংকুচিত হবে এশিয়া ও পূর্ব এবং মধ্য ইউরোপে। গবেষণাপত্রের লেখক বলেছেন, ২০১৭ সালে জাপানের জনসংখ্যা ছিল ১২৮ মিলিয়ন, যা ২১০০ সালে নেমে আসবে ৬০ মিলিয়নে। থাইল্যান্ডে ৭১ মিলিয়ন হতে কমে ৩৫ মিলিয়নে, আবার স্পেনে ৪৬ মিলিয়ন হতে কমে ২৩ মিলিয়নে, অপরদিকে ইতালিতে ৬১ মিলিয়ন হতে কমে ৩১ মিলিয়নে, আর পর্তুগালে ১১ মিলিয়ন হতে কমে ৫ মিলিয়নে ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ৫৩ মিলিয়ন হতে কমে গিয়ে ২৭ মিলিয়নে নামবে বলে ওই তথ্যে জানানো হয়। চীনসহ মোট ৩৪টি দেশের জনসংখ্যা কমে অর্ধেক হয়ে আসবে।
গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী ড. ক্রিস্টোফার মারে বলেন, জনসংখ্যাই শুধু কমবে না, সমাজও সাধারণভাবে বয়োজ্যেষ্ঠ হয়ে আসবে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাবও ফেলবে। তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে তখন যাবে; তার অর্থ হলো, সামাজিক নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য বীমার সংখ্যাও বাড়বে। যদিও কর দেওয়ার মানুষও কমে যাবে।’
অপরদিকে ২০১৭ সালে সাব-সাহারান অঞ্চলে ১০৩ কোটি মানুষ ছিল, ২১০০ সাল নাগাদ তা বেড়ে হবে ৩০৭ কোটি! উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের জনসংখ্যা ৬০০ মিলিয়ন হতে বেড়ে ৯৭৮ মিলিয়ন হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে বিশ্বের জনসংখ্যা ৭৭৯ কোটি ৮১ লাখ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪৩ কোটিই চীনে, ভারতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩৮ কোটি। ১৬ কোটি ৪৭ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।