দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুই মাস ধরে এইডস-এ মৃত্যুবরণকারী পিতা-মাতার কবরের পাশে বসবাস করছে ৪ ভাইবোন। গ্রামবাসীর দেয়া খাবারেই বেঁচে আছে তারা। এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রতাপড়ে।
দুইমাস ধরে বাবা-মায়ের কবরের কাছে নীল প্লাস্টিকের তাঁবুতে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে ওরা । তারা সবাই ভাইবোন। সকলের মধ্যে ছোটটির বয়স মাত্র ৭। গ্রামবাসীর দেয়া খাবারেই বেঁচে আছে তারা।
সূত্র জানায়, এলাকাটি প্রাদেশিক রাজধানী লক্ষৌ থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দুই বছরের মধ্যে এদের মা-বাবা দুজনেই এইডসে মারা যায়। তারপর থেকে কোনো আত্মীয়-স্বজন তাদের সাহায্য করেনি। তাদের এক চাচা বলেছেন, যেখানে বড় হয়ে উঠেছে সেই ছোট ঘরটিতে ওরা যদি থাকে তবে যে ভাইরাসের কারণে ওদের মা-বাবা মারা গেছেন, তাতে ওরাও আক্রান্ত হবে। এদের মধ্যে বড়জনের বয়স ২১ , সে-ই তার ছোট চার ভাইবোনকে নিয়ে কবরস্থানে চলে যায়। প্রতিবেশীরা স্বীকার করেছে, ছেলে-মেয়েগুলোকে তারা কোনো সাহায্য করার প্রস্তাব দেয়নি এবং সমাজচ্যুত করেছে। প্রতিবেশী হযরত আলী জানিয়েছেন, তারা ভেবেছেন তারাও আক্রান্ত হতে পারেন, তাই ওদের গ্রামের বাইরে দূরে কোথাও গিয়ে থাকতে বলেছেন।
সংবাদ মাধ্যমে এ ঘটনা প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব নিগৃহীত ওই শিশুদের প্রত্যেকের জন্য এক লাখ রুপি অনুদানসহ একটি বাড়ি বরাদ্দের ঘোষণা দেন। এরপরও কোনো আত্মীয় তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, আমরা তাদের একটি বাড়ির ব্যবস্থা করছি। তাদের মধ্যে দুজনকে স্কুলে পাঠানো হবে। গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের আওতায় সবার বড়জনের চাকরির ব্যবস্থা করছি। কিন্তু সামাজিকভাবে একঘরে করে রাখার বিষয়ে আমরা কি করতে পারি।
উল্লেখ্য, এইডস রোগির কেবল রক্ত সঞ্চালন বা যৌন সহবাসের মাধ্যমে একজনের থেকে আরেক জনের এই রোগ ছড়াতে পারে। এইডস রোগির সঙ্গে বসবাস বা খুব নিকটে থাকলেও এই রোগ ছড়ানোর কোন কারণ নাই। তারপরও মানুষের মধ্যে অসচেতনার কারণে এই রোগ সম্পর্কে প্রকৃত কোন ধারণা অনেকের নাই। যে কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এইডস রোগীরা নানাভাবে নিগৃহিত হয়ে থাকেন। খবর এনডিটিভির।