দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনার কারণে সিজনাল কোনো ফ্লু দেখা দিলেও অনেক রকম সমস্যায় পড়তে হয়। এক দিকে ডাক্তারের কাছে যাওয়া যায় না। তাছাড়া টেনশনও বেড়ে যায় বহুগুনে। এমন অবস্থায় সিজনাল ফ্লু হতে বাঁচতে যা আপনাকে করতে হবে।
বর্তমানে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে জ্বর-সর্দিজনিত রোগের প্রকোপও বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অত্যধিক শরীর ব্যথা ও জ্বর। করোনাকালে এমন ফ্লু জনিত সমস্যায় জনমনে বাড়ছে নানা রকম আতঙ্ক।
গত সপ্তাহেও প্রচণ্ড গরমে মানুষের নাভিশ্বাস ছুটে যায়। গরমের সেই তীব্রতা বর্তমানে একটু কমে এসেছে। এই যে প্রচণ্ড গরমের পর ঠাণ্ডার দিকে আবহাওয়া মোড় নিচ্ছে মানবদেহ এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কিছুটা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। যে কারণে ঋতু পরিবর্তনের সময় ব্যাপকভাবে সিজনাল ফ্লুও দেখা দেয়।
সংবাদ মাধ্যমের তথ্যমতে মতে, গত সপ্তাহের শুরু হতেই দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সিজনাল ফ্লুয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করেই যেনো বেড়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতির কারণে বাড়ছে করোনার নমুনা পরীক্ষা। চিকিৎসকরা ধারণা করছেন যে, সিজনাল ভাইরাসজনিত জ্বর-ঠাণ্ডা আরও কিছু দিন ভোগাবে দেশের মানুষকে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
ফ্লুর উপসর্গগুলো কি
সিজনাল ভাইরাস জ্বর ও করোনাভাইরাস এর উপসর্গ এবং লক্ষণ প্রায় কাছাকাছি। প্রতি বছরই বিশ্বজুড়ে সিজনাল ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে ৩ থেকে ৫ লাখ মানুষ মারা যায়। তাই এই সময়ের অসুখকে অবহেলা করা মোটেও উচিত নয়।
সাধারণ সর্দি-জ্বর ও ফ্লুর উপসর্গ প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় অনেকেই এই দুটির মধ্যে পাথর্ক্যই করতে পারেন না। সিজনাল ফ্লুয়ের উসর্গ হল সর্দি, জ্বর, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, হাঁচি, শুকনো কাশি, স্বাধ ও গন্ধের অনুভূতি কমে আসা ইত্যাদি নানা উপসর্গ।
সাধারণ সর্দি জ্বর ও ফ্লুয়ের মাঝে পার্থক্য হলো- সাধারণ সর্দি-জ্বর হলে গলা ব্যথা, মাথা ব্যথাসহ নানা উপসর্গ আস্তে আস্তে বাড়তেও থাকে। ফ্লুয়ের ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই মাত্রাতিরিক্ত জ্বর ও অন্যান্য লক্ষণগুলো তীব্রভাবে দেখা দেয়।
ফ্লু হতে নিরাদ থাকতে করণীয়
# ফ্লু যদিও অনেকটা করোনা ভাইরাসের মতোই মানুষের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করার ক্ষমতা রাখে, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অল্প সময়ের মধ্যে ফ্লু নিজ থেকেই সেরে যাচ্ছে।
# কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ফ্লু হতে সেরে ওঠতে দীর্ঘ সময়ও লাগতে পারে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস ও হার্টের অসুখ রয়েছে এবং শ্বাসকষ্টও রয়েছে তাদের জন্য ফ্লু বেশ বিপদ ডেকে আনতে পারে।
# ফ্লু হলে ঠাণ্ডা হতে অবশ্যই দূরে থাকুন। পর্যাপ্ত গরম আবহাওয়া, গরম খাবার দ্রুত ফ্লু সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
# পরিমিত বিশ্রাম ও ঘুম ফ্লু রোগীর জন্য অনেক বেশি কার্যকর।
# প্রচুর পরিমাণে পানি এবং তরল খাবার খেতে হবে। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধও খেতে হবে।
# তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত কখনও অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।
# গর্ভবতী নারী ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ফ্লু থেকে বাঁচতে বছরে অন্তত একবার ফ্লুয়ের টিকাও নিতে পারেন।
# ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রী হতেও অন্যরা আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এই সময় একটু নিয়ম মেনে চলাই ভালো।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।