দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মহামারী করোনা ভাইরাস চরমভাবে দাপট দেখাচ্ছে ভারতে। দেশটিতে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন এই রোগে। প্রতিদিনই অন্তত ৫০ হাজার করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে ঠিক সেভাবে চলতে থাকলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ দেশটির মোট ১৩০ কোটি জনসংখ্যার অন্তত অর্ধেকই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। এমন একটি পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির করোনা বিষয়ক সরকারি কমিটি।
কেন্দ্রীয় সরকারের করোনা ভাইরাসবিষয়ক পূর্বাভাস কমিটির ওই সদস্য জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির পর সংক্রমণের গতি কমে আসতে পারে দেশটিতে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, বুধবার সকাল পর্যন্ত ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬ লাখ ৫১ হাজার। বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরই আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত।
যদিও ভারতে কোভিডের প্রথম ঢেউ ধীরে ধীরে ক্রমেই স্তিমিত হয়ে আসছে সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকেই। ক্রমশ কমছে শনাক্তের সংখ্যাও।
বর্তমানে দৈনিক আক্রান্তের হিসাবে শানক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজারের কাছাকাছিই ঘোরাঘুরি করছে। তবে বাস্তবে আরও অনেক বেশি মানুষই আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করছে দেশটির সরকারের করোনা ভাইরাস পরিসংখ্যানবিষয়ক পূর্বাভাস কমিটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কমিটির সদস্য আইআইটি কানপুরের অধ্যাপক মণীন্দ্র আগরওয়াল জানিয়েছেন যে, তাদের গাণিতিক মডেল অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ বর্তমানে কোভিড আক্রান্ত। এই সংখ্যা ফেব্রুয়ারির মধ্যে বেড়ে ৫০ শতাংশে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারত সরকারের করা সেরোলজিক্যাল সার্ভে অনুযায়ী দেখা যায়, ১৪ শতাংশ মানুষের দেহে করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিবডি রয়েছে। তবে কমিটির অঙ্কের হিসাব বলছে যে, এই সংখ্যা আরও বেশি।
কমিটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরার নির্দেশ যদি উপেক্ষা করে, তা হলে তাদের পূর্বানুমানও ছাড়িয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাত্র এক মাসেই সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে ২৬ লাখ।
করোনায় আক্রান্তের তুলনায় ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। এই পর্যন্ত দেশটিতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৯১৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।