দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক সময় আইপিএল জুয়ায় নিঃস্ব হচ্ছেন মানুষ। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে বিষয়টি দেখার কেও নেই। এখনই নজরদারি না আনলে আরও বহু মানুষ নি:শ্ব হয়ে যাবে।
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের এক জুয়েলারি ব্যবসায়ী যার নিজের দুটি দোকানভিটাও ছিল এক সময়, এখন তিনি নিঃস্ব। এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন শ্বশুরবাড়ি। তার জীবনে এমন ছন্দঃপতন কেনো ঘটলো? উত্তর পেতে মোটেও দেরি হলো না। ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাজি ধরার নামে জুয়ায় মেতে তার সর্বনাশ হয়েছে। উপজেলার বড়বাজারের ওই ব্যবসায়ী প্রতিবছর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ যাকে বলে আইপিএল আসর চলার সময় সেখানকার করিম উল্লাহ গলি, জিপস্ট্যান্ড, কামালখানী রোড, আদর্শ স্কুল রোডসহ কয়েকটি স্থানে বসা জুয়ার আসরের নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এক সময় তার ব্যবসায় টান পড়ে। তবু ঋণ করে জুয়া খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত দোকানভিটা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধও করতে হয় তাকে।
চার বছর আগেও শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের ৩০ বছর বয়সী নূর ইসলাম আইপিএল জুয়ায় বুঁদ হয়ে থাকতেন। এক পর্যায়ে নিজের ৪০ লাখ টাকা দামের ট্রাক বিক্রি করে দিয়েছিলেন মাত্র ২৫ লাখ টাকায়! জুয়ায় হারতে হারতে সর্বস্বান্ত নূর ইসলাম বর্তমানে অন্যের ট্রাকের চালক।
ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের গায়ে জুয়ার কলঙ্ক লেগেছে অনেক পূর্বেই। ম্যাচ গড়াপেটা কিংবা স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ক্যারিয়ার বরবাদ হয়েছে অনেক নামি দামি খেলোয়াড়ের। জুয়া শুধু খেলোয়াড় কিংবা কর্মকর্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, তাতে জড়িয়েছে এর দর্শকরাও। টেলিভিশনে খেলা দেখে বাজি ধরায় গা ভাসাচ্ছে বাংলাদেশের অনেক দর্শক। এই জুয়া এখন মহামারির মতোই ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সর্বস্তরে। সবচেয়ে বেশি জুয়া হয় লম্বা সময় ধরে ও বিশ্বের ক্রিকেট তারকাদের অংশগ্রহণে হওয়া আইপিএল ঘিরেই। পেশাদার জুয়াড়িরাও এ্ইসুযোগ নিচ্ছেন। যে কারণে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকেই।
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে মাঠে দর্শকের উন্মাদনা না থাকলেও আইপিএল ঘিরে দেশে এবারও চলছে রমরমা ওই জুয়ার আসর। শহর হতে গ্রামের পাড়া-মহল্লা, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অভিজাত এলাকা, বিভিন্ন ক্লাব, ফোন কিংবা অনলাইনে প্রকাশ্যেই চলে আসছে এই জুয়া। মোবাইল ফোনে ও বেটিং সাইটের অ্যাপস দিয়েও হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ভার্সনের ক্রিকেট খেলা নিয়ে জুয়ার আসর।
জুয়ার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা, সংঘর্ষ এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটছে মাঝে মধ্যেই। আমাদের দেশে জুয়া আইনত নিষিদ্ধ। তবে ক্যাসিনো, হাউজিসহ অন্য জুয়ার ব্যাপারে পুলিশ-র্যাবের নজরদারি থাকলেও রাজধানীতে আইপিএল জুয়া নিয়ে নেই কোনো রকম আভিযান। অবশ্য দেশের কয়েকটি এলাকায় আইপিএল জুয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করার পর অভিযানে নেমেছে পুলিশ ও র্যাব। কয়েকটি জেলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। সম্প্রতি ফেনীর পরশুরামে আইপিএল জুয়া প্রতিরোধ করতে সন্ধ্যার পর কেবল নেটওয়ার্কের খেলার চ্যানেলগুলো বন্ধ রাখার উদ্যোগ নিয়েছেন ফেনীর পৌর মেয়র। কুড়িগ্রামে মাইকিং করে আইপিএল জুয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে অভিযান চালিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ক্রিকেট খেলা নিয়ে যে জুয়া বর্তমানে হচ্ছে সেটি আমাদের নজরে এসেছে। নওগাঁয় অনেক জুয়াড়িকে ধরা হয়েছে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরাও তথ্য পেয়েছি। আমাদের কমিশনার স্যার এই জুয়া বন্ধ করতে বিশেষভাবে নির্দেশও দিয়েছেন। আমাদের নজরদারি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।