দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লোক দেখানো আমল বা প্রশংসা পাওয়ার জন্য যে কোনো ভালো কাজই হোক না কেনো ইসলামে সেটি কবিরা গোনাহ। এ সব আমল-ইবাদতকারীর পরিণতিও হবে ভয়াবহ। আল্লাহ কখনও লোক-দেখানো আমল কবুল করেন না।
কেয়ামতের দিন প্রশংসা পাওয়ার জন্য ভালো কাজ করার ব্যক্তিদের বিচার প্রথম করা হবে। হাদিসের বর্ণনায় তা প্রমাণিত হয়েছে। লোক দেখানো ইবাদতকারী এবং তার শাস্তির বর্ণনায় হাদিসে এসেছে যে-
হজরত সুলায়মান ইবনে ইয়াসার রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন যে, ‘লোকেরা আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে পৃথক হওয়ার পর সিরিয়ার (নাতিল নামক) এক ব্যক্তি তাঁকে বললো, হে শায়খ! আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে শুনেছেন, এমন একটি হাদিস আমার নিকট বর্ণনা করুন।
তিনি বললেন যে, হ্যাঁ, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে লোকের মধ্যে কেয়ামতের দিন প্রথম (দিকে) যাদের বিচার করা হবে, তারা হবেন তিন শ্রেণীর লোক-
প্রথমত: শহীদ
সেই ব্যক্তি যে শহিদ হয়েছে। তাকেই আনা হবে। আল্লাহ তাআলা তাকে তাঁর নেয়ামতসমুহ স্মরণ করাবেন; সে তা স্বীকারও করবে। তাকে বলবেন যে, এসব নেয়ামত ভোগ করে তুমি কী আমল করেলো? সে ব্যক্তি তখন বলবে, আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্য লড়াই করে শহীদ হয়েছি। তিনি (আল্লাহ) বলবেন যে, তুমি মিথ্যা বলছো। বরং তুমি যুদ্ধ করেছিলে এই জন্য যে, তোমাকে যেনো বলা হয় অমুক ব্যক্তি বীর-বাহাদুর; (দুনিয়াতে তোমাকে) তা বলাও হয়েছে। তার সম্পর্কে আদেশ করা হবে, যে কারণে তাকে তার মুখের উপর (অধঃমুখে) টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামেই নিক্ষেপ করা হবে।
দ্বিতীয়ত: কুরআনের তেলাওয়াতকারী
এক ব্যক্তি (কুরআনের) ইল্ম শিক্ষা করেছে এবং লোকদেরকে শিক্ষা দান করেছে ও কুরআন পাঠ করেছে। তাকে আনা হবে, তাকে তাঁর নেয়ামতসমুহ স্মরণ করাবেন, সে তা স্বীকারও করবে। তাকে বলা হবে যে, এর জন্য তুমি কী আমল করেছো? সে বলবে, আমি ইল্ম শিক্ষা করেছি, অন্যকেও সেই শিক্ষা দিয়েছি, আর তোমার সন্তুষ্টির জন্য কুরআন পাঠও করেছি। তিনি (আল্লাহ তাআলা) বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। বরং তুমি ইল্ম শিক্ষা করেছিলে এ জন্য যেনো তোমাকে আলিম বলা হয়। আর কুরআন পাঠ করেছিলে, যেনো তোমাকে ক্বারি বলা হয়; (দুনিয়াতে তোমাকে) তা (আলেম ও ক্বারি) বলাও হয়েছে। তার সম্পর্কে আদেশ করা হবে, যে কারণে তাকে তার মুখের উপর (অধঃমুখে) টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
তৃতীয়ত: দানকারী
আর এক ব্যক্তি; আল্লাহ যাকে প্রশস্ততা (সম্পদ) দান করেছিলেন ও সর্বপ্রকার মাল দানও করেছিলেন, তাকে আনা হবে। তাকে তাঁর নেয়ামত সম্পর্কে অবহিতও করা হবে, সে তা স্বীকারও করবে। তাকে বলা হবে যে, এর জন্য তুমি কী আমল করেছো? সে বলবে, আমি তোমার পছন্দনীয় কোনো রাস্তাই ছাড়িনী, তোমার সন্তুষ্টির জন্য যাতে ব্যয় করিনি। তিনি (আল্লাহ তাআলা) বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। বরং তুমি সেজন্যই ব্যয় করেছো, যাতে (তোমাকে) দাতা বলা হয়। (দুনিয়াতে তোমাকে) তা বলাও হয়েছে। তার সম্পর্কে আদেশ করা হবে, যে কারণে তাকে তার মুখের উপর (অধঃমুখে) টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (নাসাঈ)
পরকালে লোক দেখানো আমলকারীর পরিণত সম্পর্কে বিশ্বনবি একটি নমুনাও পেশ করেছেন। সুতরাং এই হাদিস হতে এ কথা প্রমাণিত সত্য যে, লোক দেখানো ইবাদত কিংবা আমলকারীর জন্য রয়েছে কঠিন পরিণতি। যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।
যেহেতু আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য তাওবার দরজা সব সময় খোলা রেখেছেন। তাই বান্দা চাইলে আল্লাহর কাছে তাওবা করে ফিরেও আসতে পারেন। যেসব বান্দা লোক দেখানো ইবাদতের সঙ্গে জড়িত, তারা চাইলেই তাওবা করে ফিরে আসার সুযোগও রয়েছে। আল্লাহ আমাদের সব সময় কুরআন-সুন্নাহর নসিহত মেনে চলার তাওফিক দান করুন- আমিন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।