দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাইক্রোসফ্ট সংস্থার কর্ণধার বিল গেটসকে টপকে সম্প্রতি ‘ব্লুমবার্গ বিলিওনেয়ার ইনডেক্স’-এর বিচারে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় দু’নম্বরে স্থান করে নিয়েছেন টেসলা কর্ণধার ইলন মাস্ক। তিনি এবার মহাকাশ ভ্রমণে পরিকল্পনা নিচ্ছেন।
এই বিলিয়োনিয়ার মহাকাশ ভ্রমণে মহাপরিকল্পনা নিতে যাচ্ছেন। প্রতিবার মাত্র ৪/৫ জন করে অভিযাত্রীকে না নিয়ে অন্তত ১শ’ জনকে একসঙ্গে নিয়ে পাড়ি দিতে পারবে এমন এক মহাকাশযান তৈরির কথা ভাবছেন তিনি।
টেসলা ছাড়াও একাধিক সংস্থার মালিক ইলন মাস্ক। ‘স্পেসএক্স’ হলো তাঁরই তৃতীয় কোম্পানী। ২০০২ সালে এই কোম্পানীটি গড়ে তোলেন তিনি। এর ৬ বছরের মধ্যে নাসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাতে শুরু করে তার এই সংস্থাটি।
সাধারণ মানুষকে মহাকাশ ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে এই স্পেসএক্স। এই বছরই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে এই মিশনটি চালু করার কথা ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। ওই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনস্পিরেশন ৪’। যা চলতি বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
মহাকাশে যারা ভ্রমণ করতে চান, স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল-এ করে তেমন ৪ জন নভোচারীকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী ১৫ মাসে মোট ৭ বার এভাবেই ওই সংস্থা মহাকাশে ভ্রমণ করিয়ে আনবেন আগ্রহীদের।
এর বাইরেও ইলন মাস্ক এমন একটি যান তৈরির চেষ্টায় রয়েছে যা তার মতে, মহাকাশ অভিযানের ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠবে। এর নাম হলো স্টারশিপ। প্রতিবার মাত্র ৪/৫ জন করে মহাকাশ অভিযাত্রীকে না নিয়ে অন্তত ১০০ জনকে একসঙ্গে নিয়ে পাড়ি দিতে পারবে এমন একটি মহাকাশযান। ঠিক যেনো যাত্রিবাহী বিমানের মতোই!
১০০ জনকেই নিয়ে উড়ে যাবে মঙ্গলগ্রহে। এর থেকেও আশ্চর্যের বিষয় হলো ওই যান পুনর্ব্যবহারযোগ্যও হবে। অর্থাৎ লালগ্রহ থেকে ফিরে এসে আবারও ১০০ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দিতে পারবে লালগ্রহে।
ইলনের এই স্বপ্নের মহাকাশযান স্টারশিপের দুটো অংশ। রকেট অংশটি হলো সুপার হেভি ও মূলত স্পেসক্র্যাফ্ট অংশটির নামই হলো স্টারশিপ। দুটো মিলিয়ে দৈর্ঘ্য ৩৯৪ ফুট হবে। অর্থাৎ ৩৬/৩৭ তলা বাড়ির সমান! শুধু স্টারশিপের দৈর্ঘ্যেই হলো ১৬০ ফুট।
এর ঠিক মাঝামাঝি অংশে থাকবে জ্বালানি ট্যাঙ্ক। যাতে তরল মিথেন ও তরল অক্সিজেনও থাকবে। দুটোকে একসঙ্গে বলা হয় মিথাক্সল। মিথেন হলো মূল জ্বালানি। যা এই যানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর মিথেনকে জ্বলতে সাহায্য করবে তরল অক্সিজেন।
রকেট অংশে ৩ হাজার ৪০০ টন মিথাক্সল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সুপার হেভির দৈর্ঘ্য ২৩০ ফুট। এর ইঞ্জিন ১০০ হতে ১৫০ টন পর্যন্ত ভার বহন করতে সক্ষম।
মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার পর সুপারহেভি হতে স্টারশিপ পৃথক হয়ে যাবে। তবে অন্যান্য মহাকাশযানের মতোই এই রকেট মহাকাশে উদ্বাস্তুর মতো ঘুরে বেড়াবে না। এটি আবারও লঞ্চ প্যাডে ফিরে আসবে দ্বিতীয়বার মহাকাশ ভ্রমণ যাত্রীদের নেওয়ার জন্যই।
স্টারশিপের মধ্যে ৪০টি পৃথক কেবিন করার পরিকল্পনাও রয়েছে ইলনের। প্রতিটি কেবিনে ৪ হতে ৫ জন করে থাকতে পারবেন। তবে প্রাথমিকভাবে ৩ জনকে কেবিনে রাখার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। যে কারণে নূন্যতম ১০০ যাত্রী নিয়ে পাড়ি দেবে এই যানটি।
একইভাবে মহাকাশ ভ্রমণ সম্পূর্ণ হওয়ার পরই স্টারশিপ ফিরে আসবে তার লঞ্চ প্যাডে। আর তখন স্টারশিপের পরবর্তী অভিযানের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে।
ইতিমধ্যেই ইলন মাস্কের এই স্টারশিপ গড়ে তোলার প্রকল্পকে সাড়ে ১৩ কোটি ডলার অনুদানও দেয় নাসা। স্টারশিপকে চাঁদে নামানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
২০২৩ সাল নাগাদ প্রথমে চাঁদের কক্ষপথে ও পরে মঙ্গলের কক্ষপথে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে স্টারশিপের। চাঁদের কক্ষপথে ৭ দিন প্রদক্ষিণ করার পর আবারও ফিরে আসবে। সেজন্য দু-তিন বছর পূর্ব হতেই টিকিট বুকিং শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ইলন মাস্কের জন্ম ১৯৭১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। বাবা ছিলেন একজন বড় মাপের ইঞ্জিনিয়ার। মা ছিলেন জনপ্রিয় কানাডিয়ান একজন মডেল। আজ তার যে খ্যাতি, যে প্রতিপত্তি, তার ভিত পোঁতা ছিল তার শৈশবে।
ছোট হতেই ইলন মাস্ক নিত্যনতুন জিনিস আবিষ্কারের কথা ভাবতেন। নানা কিছু দিয়ে পরীক্ষা চালাতেন সব সময়। তার কল্পনার মাত্রা ছিল একেবারেই বাঁধনছাড়া। ইলন মাস্ক সব সময় এতোটাই কল্পনাতে বুঁদ হয়ে থাকতেন যে কারও ডাকে সাড়াও দিতেন না। সেই বাঁধনছাড়া কল্পনার জন্যই মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন হতে চলেছে তার হাত দিয়েই। আজ তিনি বিশ্বে যেনো এক খ্যাতির শীর্ষে অবস্থান করছেন। হয়তো আরও এগিয়ে যাবেন অনেক দূর এবং পৃথিবীকেও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।