দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই ইচ্ছা মতো লবণ খান। হয়তো মনে করেন লবণ একটু বেশি খেলে আর এমন কিইবা হবে! অথচ আমাদের জানা নেই যে, অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগও হতে পারে।
লবণ স্বাদে তিতা হলেও একটা পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। লবণ তরকারী কিংবা ভর্তা-ভাজির স্বাদ বাড়ায়। মূলত সেজন্যই আমরা লবণ ব্যবহার করে থাকি। তবে শরীরের জন্য প্রয়োজন লবণে থাকা সোডিয়াম। এটি শরীরের পানি ও খনিজ লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। রক্তের পি.এইচও ঠিক রাখে। সোডিয়ামের দরকার শরীরের স্নায়ুর সিগন্যাল পরিবহণ করার জন্য। এটি দরকার মাংসপেশির সংকোচন প্রসারণের জন্যও।
আমাদের দৈনিক সোডিয়াম প্রয়োজন ১০০০-৩০০০ মিলিগ্রাম। অনেকের মতে, ২৪০০ মিলিগ্রামের বেশি নয়। সোডিয়ামের এই চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন খাবার লবণ প্রয়োজন পড়ে বড়দের ক্ষেত্রে মাত্র ৬ গ্রাম কিংবা প্রায় এক চা চামচ পরিমাণ। আর শিশুদের কিডনি মোটেও বেশি লবণ সহ্য করতে পারে না। তাই তাদের প্রয়োজন পড়ে আরও কম। ১ থেকে ৩ বছর বয়সী শিশুদের প্রয়োজন দৈনিক মাত্র দুই গ্রাম কিংবা ৩ ভাগের এক চা চামচ, চার থেকে ৬ বছর বয়সীদের জন্য দরকার প্রায় ৩ গ্রাম কিংবা আধা চা চামচ, অপরদিকে ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৫ গ্রাম পরিমাণ লবণ প্রয়োজন। ১০ বছরোর্ধ শিশুদের প্রয়োজন বড়দের সমান অর্থাৎ দৈনিক প্রায় ৬ গ্রাম পরিমাণ। প্রতিদিন ৬ গ্রামের চেয়ে কম লবণ খেলে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না।
এক গবেষণায় দেখা যায়, কম লবণ খেলে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও কমে প্রায় ১৩ শতাংশ ও ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় প্রায় ১০ শতাংশ। অর্থাৎ কম লবণ খাওয়া শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরের রক্তচাপ বেড়ে যাবে। লবণ শরীরে বাড়তি পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে করে রক্তের ভলিউম বা পরিমাণও বেড়ে যায়। সেজন্য বেড়ে যায় রক্তচাপ। শরীরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধমনীর সংকোচন বাড়িয়ে দেয় এই লবণ। সেজন্যই রক্তচাপ বাড়ে। রক্তচাপ বাড়ার কারণে বেড়ে যায় বিভিন্ন হৃদরোগ যেমন ইস্কেমিক হৃদরোগ, হার্ট ফেইলিওর এবং স্ট্রোক এর ঝুঁকি। শরীরে বাড়তি পানি জমে শরীর কিছুটা মোটাও হয়ে যেতে পারে।
তাই তরকারীতে লবণ হতে হবে অবশ্যই পরিমিত। আমরা অনেকেই লবণ দিয়ে ভাত খাওয়াটা শুরু করি। বাড়তি লবণ কিংবা পাতে লবণ খাওয়া পরিহার করতে হবে। পারলে টেবিল থেকে লবণদানি সরিয়ে রাখতে হবে। এতে করে লবণ গ্রহণও কমে যাবে শতকরা অন্তত ১০ হতে ১৫ ভাগ। লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন: লবণাক্ত মাছ, চিপস, ক্রেকার্স, লবণাক্ত বিস্কুট, কেচআপ, পনির, লবণ-বাদাম, বেকিং পাউডার ইত্যাদি খাওয়াও কমাতে হবে। ফাস্ট ফুডে যোগ করা হয়ে থাকে বাড়তি লবণ। তাই ফাস্ট ফুডও পরিহার করুন। বড়ই, তেঁতুল, আমলকি, আমড়া, জাম্বুরা, জলপাই, আনারস, কামরাঙা- এই জাতীয় টক ফল লবণ দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস আপনাকে পরিত্যাগ করতে হবে। তাহলে দেখবেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত লবণ আর আপনার খাওয়া হচ্ছে না। তাই অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করুন। সুস্থ্য-সুন্দর জীবন যাপন করুন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।