দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জুমার দিন হলো উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ হতে উপহারস্বরূপ। তাই এই শুক্রবার দিনটিকে আরবিতে বলা হয় ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’।
জাহিলি যুগে এই দিনটি ‘ইয়াওমুল আরুবাহ’ নামেও পরিচিত ছিল। এর আরও নাম রয়েছে।
যেমন—১. সায়্যিদুল আইয়্যাম
২. আফজালুল আইয়্যাম
৩. ইয়াওমুল আজহার
৪. ইয়াওমুল আতিক।
তবে পবিত্র কোরআনে এই দিনটিকে ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’ বলেই অভিহিত করা হয়েছে। এখানে জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব এবং বিশেষত্ব আলোচিত হলো:
যে কারণে শ্রেষ্ঠ হলো শুক্রবার
আল্লাহর পক্ষ হতে উপহার। আল্লাহ অন্য নবী-রাসুল এবং তাঁদের উম্মতদের চেয়ে আমাদের উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এই দিনটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে মনোনীত করেন।
কবরের আজাব লাঘব
শুক্রবার মৃত্যুবরণ করা প্রকৃত মুসলমানদের সৌভাগ্যের নিদর্শন। কেনোনা শুক্রবারের বরকতে এই দিনে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি কবরের আজাব হতে মুক্তি লাভ করেন। হাদিসে বলা হয়েছে, জুমার দিনে অথবা রাতে কোনো মুসলিম ব্যক্তি যদি মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে মহান আল্লাহ্ তাকে কবরের শাস্তি হতে রক্ষা করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৪)
সগিরা গুনাহ মোচন করা হয়
কোনো মুসলিম যদি ৫ ওয়াক্ত নামাজ ও জুমার নামাজ নিয়মিত আদায় করেন আর কবিরা গোনাহ হতে বেঁচে থাকেন, তাহলে শুক্রবারের শ্রেষ্ঠত্বের কারণে দুই জুমার মধ্যবর্তী সব সগিরা গোনাহ মোচন করে দেওয়া হয়ে থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
শুক্রবারের ৫টি বিশেষত্ব
স্রষ্টার পক্ষ হতে শুক্রবার শুধু উপহারই নয়; বরং আল্লাহ্ তাআলা দিনটিকে নানা বিশেষত্বে ভরত্ওে করে দিয়েছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ১. এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়। ২. তাঁকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়। ৩. এই দিনেই তিনি মৃত্যুবরণও করেন। ৪. এই দিনে এমন একটি সময় রয়েছে (আসরের পর), এই সময় কেও হারাম জিনিস ছাড়া অন্য কানো প্রার্থনা করলে আল্লাহ্ তা মঞ্জুর করেন। ৫. এ দিনই কিয়ামত সংঘটিত হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)
পরকালে অগ্রগামী হওয়ার নিদর্শন
কিয়ামতের দিন অন্য নবীদের উম্মতদের চেয়ে আমরা থাকবো সর্বদিক থেকেই অগ্রগামী। রাসুল (সা.) বলেছেন যে, আমরা সর্বশেষ উম্মত; তবে কিয়ামতের দিন আমরা হবো অগ্রগামী। যদিও সব উম্মতকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের আগে ও আমাদের দেওয়া হয়েছে একেবারে সবার শেষে। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৬৩)
সুরা কাহফ দুই জুমার জ্যোতি
আল্লাহ্ এ দিনে আর একটি বিশেষ অফারও দিয়েছেন সুরা কাহফের তিলাওয়াতের মধ্যে। যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর হতে শুক্রবার সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করবে তাঁর জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়টি আলোকিত থাকবে। রাসুল (সা.) বলেছেন যে, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবেন তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় যেনো জ্যোতির্ময় হবে। (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৫৯৯৬)
তাই আমাদের উচিত, এই বরকতপূর্ণ দিনে বেশি বেশি করে ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা এবং সকল রকম গোনাহ হতে বিরত থাকা। আল্লাহ আমাদের সকলকে বেশি বেশি করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ করে দিন- আমিন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।