দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশী বিজ্ঞানী সালমা সুলতানা পেলেন পশু চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় এশিয়ার শত বিজ্ঞানীর তালিকায় যে তিন বাংলাদেশী নারী স্থান করে নিয়েছেন তাদের একজন হলেন সালমা সুলতানা।
বিবিসি বাংলার এক খবরে বলা হয়েছে, পশু চিকিৎসার শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশী বিজ্ঞানী সালমা সুলতানাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী এশিয়ান সায়েন্টিস্টে ১০০ জন বিজ্ঞানীর এই তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞানী সালমা সুলতানা একজন কৃষিবিদ। মূলত তিনি খামারি এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের নিয়ে কাজ করেন ও পশুর রোগ নির্ণয়ের জন্য ল্যাবরেটরিসহ একটি ভেটেরিনারি হাসপাতালও তিনি গড়ে তুলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় তিনি দেখতে পান যে, দেশে পশু চিকিৎসায় একটি শূন্যতা রয়েছে। সে কারণেই তিনি এই বিষয়ে কাজ করার জন্য আরও উৎসাহী হন।
এই বিষয়ে সালমা সুলতানা ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, আমাদের দেশে পশু চিকিৎসক রয়েছে। তবে তাদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যায় সহকারী কিংবা ভেটেরিনারি নার্স নেই। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি কেও নেই যিনি আমাকে একটুখানি সাহায্য করতে পারেন। চিকিৎসকরা সবকিছু করতে পারে না। আমাদের ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক সীমাবদ্ধতা। তখন মনে হলো যে, এখানে কাজের একটা বড় সুযোগ রয়েছে।
সালমা সুলতানা আরও বলেছেন, আমাদের দেশে কৃষি খাতে অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে গবাদি পশু চাষের বেলায় কৃষকরা এখনও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন না। তাছাড়াও এই বিষয়ে তাদের সাধারণ জ্ঞানেরও অনেক অভাব রয়েছে।
এশিয়ান সায়েন্টিস্টে আরও যে দু’জনসহ ৩ বাংলাদেশী
এই বিষয়ে তিনি আরও বলেছেন, গরু যেখানে রাখা হয়, সেই গোয়াল ঘরের পরিবেশও খুব একটা উন্নত নয়। একটা গোয়াল ঘরের ছাদ যে ১৪ থেকে ১৮ ফুট উঁচু হতে হবে সেটিও অনেকেই জানেন না। এমনকি গবাদি পশুর প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞানও নেই। এই বিষয়ে তারা কোনো সাহায্য সহযোগিতাও পাচ্ছেন না, যে কারণে তাদের উৎপাদন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইতিপূর্বে গরুচাষিরা ভুষির সঙ্গে পানি মিশিয়ে গরুকে খাওয়াতো। গরুকে ভাতও খাওয়ানো হতো। জাউ রান্না করে খাওয়ানো হতো। তবে এসব খাদ্য গরুর পেটের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এই বিষয়ে তাদের জ্ঞানই নেই। আমরা তাদেরকে বলেছি আপনারা গরুকে শুকনো খাবার দেন।
সালমা সুলতানা আরও বলেছেন, আপনি দেখেন ভালো চাল ৬০ হতে ৭০ টাকা কেজি, অথচ মাছের কেজি কতো দেখেন। তবে এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৫০০ হতে ৫৫০ টাকা। যে কারণে তাদের জন্য এটা অনেক লাভজনক ব্যবসাও হতে পারে। তবে জ্ঞানের অভাবের কারণে তারা সেটি অর্জন করতে পারছেন না।
সালমা সুলতানা বলেছেন, আমাদের দেশে অনেক অসুস্থ গরুই জবাই করা হচ্ছে। তাকে হয়তোবা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় আবার জবাইও করা হচ্ছে। যে কারণে ওষুধের উপাদানগুলো তার দেহে থেকেই যাচ্ছে। সেই মাংসটাই আমরা খাচ্ছি। যে কারণে আমাদের স্বাস্থ্যও একটা হুমকির মুখে পড়ছে। কৃষকরা বর্তমানে অনেক কিছু জানতে চেষ্টা করছেন। তারা ইউটিউব ঘাটছেন। একজন খামারি যখন দেখবেন যে, দুধের উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক গুন বেড়ে গেছে, তখন তিনি নিজে থেকেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আগ্রহী হবেন।
এই এশিয়ান সায়েন্টিস্টে আরও যে দু’জন বাংলাদেশি নারী বিজ্ঞানীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে তারা হলেন – বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র’র ফেরদৌসি কাদরী। অপরজন হলেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সায়মা সাবরিনা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।