দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। এমন অবস্থায় পরীমনির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধকৃত সিনেমাগুলোর কী পরিণতি হবে?
একাধিক মামলায় আদালত তাকে প্রথমে চারদিনের রিমান্ডে দিয়েছেন। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, পরীমনির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর সত্যতা। সত্যতা মিললে, এই নায়িকার দীর্ঘমেয়াদে জেলও হতে পারে। সে কারণে, পরীমনিকে নিয়ে যারা সিনেমা বানাচ্ছিলেন তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন!
গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত পরীমনির হাতে ছিল বেশ কয়েকটি সিনেমা। যেখানে বিনিয়োগ রয়েছে কয়েক কোটি টাকার মতো। এখন প্রশ্ন উঠেছে, পরীমনির হাতে থাকা সিনেমাগুলোর কী পরিণতি হবে? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারী অনুদান প্রাপ্ত ৩টি সিনেমা ছিল পরীমনির হাতে। ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’, ‘মুখোশ’ এবং ‘প্রীতিলতা’। প্রথম দুটি ছবির পরিচালক জানিয়েছেন, শুটিং পুরোপুরিই শেষ হয়েছে।
তবে ‘প্রীতিলতা’র শুটিং ছিলো চলমান। মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক রশিদ পলাশ। পরীমনিকে নিয়ে ‘বায়োপিক’ নামে নতুন সিনেমার শুটিং হওয়ারও কথা ছিল অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। সঞ্জয় সমদ্দারের পরিচালনায় সিয়ামের বিপরীতে এই সিনেমায় পরীমনি বর্তমানে থাকবেন কিনা, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়!
পরীমনি কাণ্ডে তোপের মুখে পড়া পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় ওয়েব ফিল্ম ‘অন্তরালে’ করার কথা ছিল নায়িকা পরীমনির। জুনে এই কাজটির জন্য চুক্তিবদ্ধও হয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নজাল’ খ্যাত পরীমনি।
পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী জানিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে এলেই তিনি শুটিং শুরু করবেন। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বলছে, কাজটি পুরোপুরি অনিশ্চয়তায় মধ্যে রয়ে গেলো!
পরীমনির এসব সিনেমার সংশ্লিষ্ট পরিচালকদের সঙ্গে আলাপ করে কেওই ভবিষ্যতে কী হবে কিছুই জানাতে পারেননি। জনপ্রিয় লেখক এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ‘রাতুলের রাত রাতুলের দিন’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’। সরকারী অনুদানের সঙ্গে বঙ্গ বিডি সিনেমাটির একাংশে লগ্নীও করেছে।
অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন সিনেমাটি গত বছরই শুটিং শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক আবু রায়হান জুয়েল। তিনি বলেছেন, পরীমনিসহ পুরো সিনেমার শুটিং, ডাবিং সবই শেষ। কালার এবং মিউজিক সংযোজন বাকি। এগুলো ছাড়াই অনুদান কমিটিকে সিনেমাটি দেখানো হয়েছে। চূড়ান্ত এডিটের পর হয়তো পরীমনির কিছু ডাবিং পরিবর্তনও হতে পারে। তবে তার প্রয়োজন পড়বে বলে মনে হচ্ছে না এবং তার জন্য সিনেমাও আটকে থাকবে না।
অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন ছবির পরিচালক আবু রায়হান জুয়েল বলেন, সরকার যেহারে গণটিকা দিচ্ছে, করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী অক্টোবর নাগাদ ছবিটি মুক্তি দিতে চাই। সিনেমাটির বেশিরভাগ টার্গেট দর্শক ও শিশুরা। তাদের দেখাতে না পারলে আপসোস থেকেই যাবে, শ্রমও বৃথা যাবে।
ইফতেখার শুভর পরিচালনায় মোশাররফ করিম এবং রোশানের সঙ্গে ‘মুখোশ’ সিনেমাটি মার্চে শেষ করেছেন নায়িকা পরীমনি। পরিচালক জানিয়েছেন, শুটিং শেষ হলেও কোনো ডাবিং হয়নি। পরীমনির একটি রোম্যান্টিক গানও বাকি। লকডাউনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে গানটির শুটিং না হলেও সিনেমায় কোনো প্রভাব পড়বে না। আরও দুটো গান আগেই শুটিং করা হয়।
ইফতেখার শুভ আরও বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরে ‘মুখোশ’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি দিতে চাই। তার আগে ডাবিংসহ অন্যান্য কাজও শেষ করতে হবে। মাস দুয়েক আমরা পরীমনির জন্য অপেক্ষা করবো। যদি তাকে না পাই বিকল্প সিস্টেমে তার অংশের ডাবিং করতে হবে। এছাড়াও অন্য কোনো উপায় নেই।
গোলাম রাব্বানীর চিত্রনাট্য এবং সংলাপে নির্মিতব্য ‘প্রীতিলতা’র পরিচালক রশিদ পলাশ বলেছেন, ছবিটির ৩৫ শতাংশ শুটিং করা হয়েছে। বাকি শুটিং ১৭ আগস্ট থেকে করার কথা ছিলো। পরীমনিও শিডিউল দিয়েছিলেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্নও ছিল। হঠাৎ তার এমন ঘটনা ঘটবে তা কে জানতো! আমরা পুরো টিম বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি। এই অবস্থায় এখন শেষ করতে পারবো কিনা, আমরা তা নিয়ে চিন্তিত। পরীমনিই সিনেমাটির লিড কাস্টিং। তাকে ছাড়া কোনোভাবেই এই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। তার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আমাদের কোনো অপশন নেই।
বায়োপিকে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন সিয়াম-পরী। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুটিং শুরুর কথা ছিল ‘বায়োপিক’ সিনেমার। পরিচালক সঞ্জয় সমদ্দার জানিয়েছেন, সিনেমাটির জন্য তিনি দীর্ঘদিন চিত্রনাট্য এবং মিউজিকের কাজও করছেন। হঠাৎ পরীমনির এমন ঘটনা কাজে বেশ ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। সঞ্জয় সমদ্দারের বক্তব্য হলো, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই আরটিভির কর্মকর্তারা বায়োপিক’র বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তথ্যসূত্র: চ্যানেল আই।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।