হাসানুজ্জামান ॥ আফগানিস্তানের পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে পর পর দুইবার বোমা হামলা হয়েছে। আত্মঘাতি বোমা হামলা। এই হামলায় কোন কোন সূত্র মতে ৬০ জন আবার কেউ কেউ বলছেন ৯০ জন এবং সর্বশেষ ১০০ এর উপরে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।
যে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলো তাদের সৈন্য ও নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করতে চলেছে ঠিক এই সময়ে এমন একটি ঘটনা বড়ই বিয়োগান্তক । এই ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু রাষ্ট্র এমনটি আভাস আগেই দিয়েছিল। অনেক সতর্কতার মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে গেল। এর দায়দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে মুসলিম জঙ্গী সংগঠন আইএস। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে কয়েক দশক থেকে আইএস এমন ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। এদের রুখতে আমেরিকা হিমশিম খেয়ে উঠেছে। এই ঘটনা বিশ^বাসীকে নতুনভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। এখন পর্যন্ত তালেবান সরকার গঠন করতে পারেনি। তাদের অভ্যন্তরে নানা বিরোধ ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে উঠছে। এদিকে তালেবানরা এখনও পাঞ্জশির প্রদেশের দখল নিতে পারেনি। সেখানে আহমেদ মাসুদ এবং সাবেক ভাইসপ্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ সালেহ’এর নেতৃত্বে ৬০০০ যোদ্ধা নিয়ে তৈরী হয়েছে তালেবান বিরোধী এনআরএফ গোষ্ঠী। এই অঞ্জলটির মানুষ কখনো বিদেশী শাসন মেনে নিতে পারেনি। সোভিয়েত সেনাবাহিনী অনেক চেষ্ঠা করেছিল এই পাহাড়ী অজ্ঞলটিকে দখল নেওয়ার। কিন্তু এখানকার পাহাড়ী মানুষ অনেক বেশী সাহসী ও যোদ্ধা। তাদেরকে সেই সময় পরাস্থ করতে পারেনি।
আজকের যে প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে সেখানে তালেবানরা কতটুকু সফলতা দেখাতে পারবে তা সময়ই বলে দিবে। যতটুকু শোনা যাচ্ছে সেখানে তালেবানদের সাথে আহমেদ মাসুদের যোদ্ধাদের থেমে থেমে যুদ্ধ চলছে। তালেবান যোদ্ধারা পাঞ্জশিরের দিকে এগিয়ে যেতে দেখে পাকিস্থানের নেতৃত্বে প্রতিবেশী দেশের সেনাসদস্যরা নতুনভাবে মহড়া দিতে শুরু করেছে। এভাবে পাকিস্থানের সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর মহড়া দেওয়ার কারণ কি তা ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তালেবানরা কাবুলে প্রবেশের সাথে সাথে আফগান জনগণকে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তার মধ্যে ছিল মেয়েদের স্কুল,কলেজে পড়তে যেতে বাঁধা না দেওয়া। মেয়েদের চাকুরির ক্ষেত্রে অবাধ সুযোগ দেওয়া। কাতারের রাজধানী দোহা’য় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশের সাথে তালেবানদের এমন চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তালেবানদের কার্যকলাপ সেই চুক্তির পরিপন্থি বলে অনেকে মনে করছেন। শুধু তাই নয় শিশু পার্কে গিয়ে ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা,বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান বন্ধ করার মধ্যদিয়ে তালবানরা মূলত তাদের আগের শাসনের দিকে ফিরে যাচ্ছে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে নিজের স্বার্থ হাসিল করা তালেবানদের কাছে নতুন কিছু নয়।
পরাশক্তি দেশগুলো তালেবানদের নিজেদের পক্ষে টানতে যারপর নাই চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু তালেবানরা কোনপথে হাটবে এ নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে নানা টানাপোড়ন রয়েছে।
সম্প্রতি তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশের সামরিক সেনাদের সাথে যুদ্ধ করে আফগানিস্থান দখল করেছে। ফলে এখনই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের সখ্যতা গড়ে উঠবে এমনটি ভাবার কিছু নেই। আবার সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথেও তারা যুদ্ধ করেছে ফলে এদের পক্ষে যাওয়াও তালেবান রাজনীতির শুভক্ষণ নয়। এ দুটি রাষ্ট্রবাদে তারা কখনো চীনের দিকে আবার কখনো ইরান,তুরস্কের দিকে ঝুঁকার চেষ্ঠা করছে। তাদের এই চেষ্ঠা সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন কি বসে থাকবে। নিশ্চয় নয়। এই দুই পরাশক্তির যে নীতি তারা আফগানিস্তানে তৃতীয় কোন শক্তিকে যে সমর্থন করবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়? এ ক্ষেত্রে আহমেদ মাসুদ এবং সাবেক ভাইসপ্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ সালেহ’র নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এনআরএফ সেই সুযোগটিই কাজে লাগাতে পারে। এভাবে পরাশক্তিগুলো নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য গোপনে আফগানে প্রবেশ করে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সেক্ষেত্রে আফগানিস্থান হতে পারে সিরিয়া,লিবিয়া এবং ইরাকের মত।
# লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।