দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড ওষুধের কারণে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে বলে দাবি করেছেন সমালোচিত ও বিতর্কিত ধর্মগুরু বাবা রামদেব।
যোগগুরু হিসেবে যতোটা না আলোচনায় থেকেছেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তারচেয়েও বেশি সমালোচিত ও বিতর্কিত ধর্মগুরু বাবা রামদেব। রামদেবের দাবি হলো, যোগাসন বা যোগাভ্যাসের মাধ্যমে সেরে ওঠা যায় নানা অসুখ-বিসুখ থেকে। আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকলে নাকি অন্ধত্বও ভালো হয়ে যায় এমন দাবি করেও হাস্যরসের কারণ হয়েছেন এই যোগগুরু রামদেব।
এবার করোনার বিস্তার রোধে অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েডের ব্যবহারকে ভুয়া এবং মূর্খতা আখ্যা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিতর্কিত এই ধর্মগুরু রামদেব। তিনি বলেছেন, অ্যালোপ্যাথি অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড ওষুধের কারণেই বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। তার দাবি,এমনকি “করোনার ভ্যাক্সিনও অকার্যকর”। তার এমন মন্তব্যের পর আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন।
রামদেব দাবি করে বলেছেন, অ্যালোপ্যাথি কোনো ওষুধই নয়! এটা কখনই চিকিৎসা ব্যবস্থা হতে পারে না। তাহলে এতো চিকিৎসকের মৃত্যু হচ্ছে কেনো? করোনার ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরও বহু ডাক্তারের মৃত্যু ঘটেছে। পৃথিবীতে যতো মানুষের রোগে মৃত্যু হয় তারচেয়েও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড নিয়ে। এগুলো তো আসলে বিষ। চারপাশে এতো অক্সিজেন থাকতে পৃথক করে কেনো সিলিন্ডার নিতে হবে।
এই যোগগুরুর এমন মন্তব্যে চটেছে ভারতীয় চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। এমনকি টেলিভিশনে সংগঠনের নেতা ডা. জয়েশ লেলের সঙ্গে রীতিমতো বিতর্কে জড়িয়েছেন বাবা রামদেব। এদিকে, বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বাবা রামদেবকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে আইএমএ।
এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. জয়েশ লেলে বলেছেন, যে ধরনের ভাষায় উনি চিকিৎসকদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন, বিজ্ঞানীদেরকে হেয় করেছেন, তাতে আমি বিস্মিতই হয়েছি। এই লোকটা মূর্খ ছাড়া কিছুই নয়। করোনা সংকটে উনি কী উদ্যোগ নিয়েছেন? কয়টা হাসপাতাল উনি এ পর্যন্ত তৈরি করেছেন? অ্যালোপ্যাথ নিয়ে মন্তব্য করার উনি কে? রামদেব কী ডাক্তার?
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বাবা রামদেবের প্রতিষ্ঠান পতঞ্জলির পক্ষ হতে দাবি করা হয়, করোনার চিকিৎসায় শতভাগ কার্যকর করোনিল নামক একটি ওষুধ। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কখনও এর স্বীকৃতি দেয়নি।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।