দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাটুরিয়াতে নদীর একেবারে কিনারে এসেই ফেরি পদ্মা নদীতে ডুবে গেছে গতকাল এই ঘটনাটি বহু মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, ৮০৬.৬০ টন ওজন এবং ১০.২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলা শাহ আমানত নামের এই রো রো ফেরি সাধারণ ঢেউয়ে পানিতে ডুবে যাবে এটা বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করতেই পারছেন না। ঝড়ে লঞ্চ ডুবে যায় কিন্তু ফেরি ডুবে যায়- এমন ঘটনা কখনও শোনা যায়নি। তবে প্রশ্ন উঠে এসেছে ফেরিগুলো অনেক পুরোনো মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি আমাদের চালাতে হবে কেনো?
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেরিটি আসলেও চলাচলের অনুপযোগী ছিল। অথচ ফেরিটি ঝুঁকিপূর্ণভাবেই চালানো হচ্ছিল। প্রশ্ন উঠেছে কিন্তু কেনো? তাহলে কে নেবে ফেরি ডোবার দায়?
ফেরিতে যারা ছিলেন তাদের বক্তব্য মাঝ নদীতেও ফেরি একদিকে কাত হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) নৌযানের তালিকা অনুযায়ী দেখা যায, ফেরি আমানত শাহ ১৯৮০ সালে তৈরি করা হয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন কোনো লঞ্চ ডুবে গেলে মালিক এবং সারেংকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে। এখন আমাতন শাহ ফেরিডুবির ভয়ঙ্কর ঘটনার পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে? যদিও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ফেরিটি ডোবেনি কাত হয়েছে!
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন লোড করে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে নোঙর করেছিলো রো রো ফেরি আমানত শাহ। ফেরি থেকে ২/৩টি যানবাহন নামার পরপরই ফেরিটি ডুবে যায়। ফেরিতে মোট ১৭টি যানবাহন ছিল। তারমধ্যে তিনটি ট্রাক নামতে পেরেছিলো।
পাটুরিয়া ঘাটে থাকা পরিবহন শ্রমিক মাইনুল হোসেন বলেছেন, সাধারণত ফেরির তলা ফেটে ধীরে ধীরে পানিতে ডুবতে থাকে। ওই অবস্থায় আমাদের চোখের সামনেই ফেরি থেকে দ্রুতগতিতে ৩টি পণ্যবাহী ট্রাক নামতে পারলেও বাকি গাড়িগুলো আর নামতে পারেনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে কাত হয়ে ডুবে যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিটি মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে।
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ৫ নম্বর ঘাটে আমানত শাহ রো রো ফেরি যানবাহনসহ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। ইতিমধ্যেই (গতকাল) কয়েকটি ট্রাক টেনে তোলা হয়েছে। উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ডুবুরি দল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে।
জানা যায়, ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলাচল করছিল মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে মালবোঝাই ১৪টি ট্রাক নিয়ে ডুবে যায় রো রো ফেরি শাহ আমানত। গতকাল (বুধবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৫ নম্বর ফেরিঘাটে ডুবে যায় এই ফেরিটি। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ফেরিটি কাত হয়ে আংশিক ডুবে যায়।
অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি নৌযানের নিবন্ধনের মেয়াদ হয় ৩০ বছর। বিশেষ জরিপের (ফিটনেস) মাধ্যমে তারপর দু’বার ৫ বছর করে নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো যাবে। তবে ৪০ বছরের বেশি সময় পার হলে কোনোভাবেই কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না। এমন আইন থাকলেও তা বন্ধ করতে পারেনি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
মূলত ব্রিটিশ শাসনামলে এই মডেলের ফেরিগুলোর প্রচলন হয়। যার কিছু এখনও পদ্মা নদীতে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের মধ্যে চলাচল করে আসছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো মেয়াদউত্তির্ণ ফেরি কিভাবে চলাচল করছিলো? এই দুর্ঘটনাটি যদি মাঝ নদীতে ঘটতো তাহলে প্রাণহানির মতো ঘটনাও হয়তো ঘটতো। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাহলে কী করছিলেন। এর দায় তাহলে এখন কে নেবে? এই প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
কিভাবে ঘাটে এসে থামলো আমানত শাহ রো রো ফেরি এবং কিভাবে সেটি ধীরে ধীরে ডুবে গেলো তার পুরো (৫.৩২ সেকেন্ড) ভিডিওটি দেখে নিন।
দেখুন ভিডিওটি
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।