ডা: মো: মাশুক ইলাহী ॥ আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহের মধ্যে কিডনী একটি। এটি নীরবে আমাদের অজান্তে আমাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কোন কারণে যদি এটি অসুস্থ হয়ে যায়, তখন আমরা এর মূল্য বুঝতে পারি।কিডনীতন্ত্রে সাধারণত যে সকল রোগ হয়ে থাকে তা জেনে নিন-
# ইনফেকশন (Acute or chronic pyelonephritis)
# প্রদাহ (Glomerulonephritis)
# কিডনীতন্ত্রে পাথর তৈরী হওয়া (Stone disease)
# কিডনীতন্ত্রে টিউমার (Tumour)
# কিডনী বিকল হয়ে যাওয়া (Acute or chronic renal failure)
কিডনী রোগের লক্ষণসমূহ:
# মাজায় ব্যথা
# কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা
# প্রস্রাবের পরিমান কমে যাওয়া
# প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া
# শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে ফুলে যাওয়া
# প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালা পোড়া করা
# খাবাওে অরুচি, বমি বমি ভাব, অতিরিক্ত রক্তচাপ
# ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া
কিডনীর রোগ নির্ণয়:
উপরোক্ত লক্ষণসমূহ যদি কারো প্রকাশ পায় অথবা যদি কেউ স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজের কিডনী ভাল আছে কিনা জানতে চান, তবে নিম্নলিখিত কয়েকটি পরীক্ষাদ্বারা প্রাথমিক ভাবে তা নির্ণয় করা যায়-
# Urine R/M/E (প্রস্রবে কোন ইনফেকশন/ প্রস্রবের সাথে রক্ত/ অতিরিক্ত প্রোটিন যাওয়া নির্ণয় করা যায়)
# S. creatinine (কিডনীর কার্যকারিতা নির্ণয় করা যায়)
# X-ray KUB (কিডনীতন্ত্রে পাথর নির্ণয় করা যায়)
# USG of KUB with PVR (কিডনীতন্ত্রে টিউমার/ প্রস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধি/ কিডনী ফুলে যাওয়া নির্ণয় করা যায়)
চিকিৎসা:
কিডনীর চিকিৎসা দুটি বিভাগে হয়ে থাকে- নেফ্রোলজি এবং ইউরোলজি। সাধারণত কিডনীর যে সকল রোগ ঔষধের দ্বারা চিকিৎসা করা হয়, যেমন- ইনফেকশন, প্রদাহ, কিডনী বিকল এগুলোর চিকিৎসা নেফ্রোলজি বিভাগে করা হয়।আর কিডনীতন্ত্রে পাথর/ টিউমার, জন্মগতত্রুটি, কোন কারনে কিডনীতন্ত্রের কোথাও মূত্র বাধা প্রাপ্ত হয়ে কিডনী ফুলে গেলে তার চিকিৎসা অস্ত্রপচারের মাধ্যমে ইউরোলজি বিভাগ করে থাকে।
কিডনী রোগ প্রতিরোধের উপায়:
# প্রচুর পানি পান করা ও নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করা
# দীর্ঘ সময় প্রস্রাব আটকে না রাখা
# ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার বা অন্য ঔষধ না খাওয়া
# ডায়াবেটিস/ উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
কিডনী রোগের চিকিৎসা কোথায় নিবেন:
সরকারী পর্যয়ে আমাদেও দেশে মেডিকেল কলেজসমূহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনী ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজি- এসকর প্রতিষ্ঠানে উপরোক্ত দুটি বিভাগই চালু আছে। এয়াড়া প্রাইভেট পর্যায়ে বারাকাহ কিডনী হাসপাতাল, কিডনী ফাউন্ডেশন হাসপাতাল- এসব প্রতিষ্ঠানে কিডনী সংক্রান্ত যেকোন রোগের চিকিৎসা পেতে পারেন।
# ডা: মো: মাশুক ইলাহী এমবিবিএস, এফসিপিএস (পার্ট-২)