দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছিল বাংলাদেশ। এবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভাতেও একই অভিযোগ উঠেছে। বিএসএফ-সীমান্ত হত্যা নিয়ে এবার উত্তাল হলো পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা।
বিএসএফ-এর এখতিয়ার বাড়ানোর প্রশ্নে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও বিধায়ক তাপস রায় রীতিমতো পরিসংখ্যান দিয়ে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে সীমান্ত হত্যা, গুম, অপহরণের অভিযোগ তুলেছেন। যা নিয়ে বুধবারও উত্তপ্ত ছিলো বিধানসভা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অবস্থান নিয়ে কটাক্ষও করেছেন।
মঙ্গলবার বিধানসভায় রাজ্য সরকার একটি প্রস্তাব পাশ করেছে। ১১২-৬৩ ভোটে পাশ হওয়া ওই প্রস্তাবে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়। কেন্দ্র বলেছে, পশ্চিমবঙ্গে ও পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে বিএসএফ-এর এখতিয়ার বাড়ানো হবে। সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত অঞ্চলে তারা কাজ করতে পারবেন। ওই অঞ্চলে তারা সাধারণ মানুষের বাড়িতে তল্লাশিও চালাতে পারবেন, আটকও করতে পারবেন। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই তারা এই কাজ করতে পারবেন।
রাজ্যের অভিযোগ হলো, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পুরো বিরোধী। এভাবে রাজ্যের এখতিয়ারে কেন্দ্র মূলত হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় বলেছেন যে, ‘কেন্দ্র পিছনের দরজা দিয়ে রাজ্যের এলাকা দখল করতে চাইছেন।’ তার বক্তব্য, এর আগে বিএসএফ-এর যে এখতিয়ার ছিল, তাতে করেও তারা সীমান্তের অপরাধ বন্ধ করতে পারেনি। এখন কোন যুক্তিতে তারা নতুন এখতিয়ারে অপরাধ বন্ধ করতে পারবে?
তাপস রায় বিএসএফের বিরুদ্ধে একাধিক তথ্যও তুলে ধরেছেন বিধানসভায়। তার বক্তব্য হলো, ‘গত ৫ বছরে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে ২৪০টি অত্যাচার, ৬০টি খুন ও ৮টি নিখোঁজের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। সেই বিএসএফ-এর এখতিয়ার বাড়িয়ে বিজেপি রাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ দখল করতে চাইছেন আর আমরা সেটি দাঁত বার করে দেখবো?’
তাপসের এই অভিযোগের জবাবে তীব্র আক্রমণ করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বিধানসভায় তিনি বলেছেন যে, ‘তারা সীমান্তে পাহারা দেয় বলে আমরা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারি, তাদের নামে অশালীন, নিম্নরুচির কথাবার্তা বিধানসভায় ব্যবহার করা হয়।’ বিজেপির আরেক বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী বলেছেন যে, ‘বিএসএফ শুধু গ্রেফতার বা বাজেয়াপ্ত করতে পারে। তাদের হাতে তদন্ত কিংবা বিচারের ক্ষমতা নেই। পুলিশের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধও নেই। তাহলে অসুবিধাটা কোথায়?’
অসুবিধা অনেক বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মীরা। মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের কর্মকর্তা কিরিটি রায় জানিয়েছেন যে, ”সীমান্তহত্যা মূলত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসএফ-এর ক্ষমতা বাড়ার অর্থ সীমান্তে অশান্তি আরও বেড়ে যাবে। কোন যুক্তিতে সীমান্ত হতে ৫০ কিলোমিটার ভিতরে সীমান্তরক্ষা বাহিনীর প্রয়োজন হয়?”
সম্প্রতি উপনির্বাচনে দিনহাটা থেকে জিতে আসা বিধায়ক উদয়ন গুহ এই বিষয়ে বলেছেন, সীমান্তে পাচারের সঙ্গেও বিএসএফ যুক্ত রয়েছে। তারা কার্ড দেখিয়ে কাঁটাতার পেরিয়ে কাজ করতে আসা নারীদের গায়ে তল্লাশির নামে হাত দেন। কোনোভাবেই বিএসএফ-এর এখতিয়ার বাড়ানোর যুক্তি মানা যায় না। এতে করে অশান্তি বাড়বে। বস্তুত, বাম ও কংগ্রেসও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা বিএসএফ-এর এখতিয়ার বাড়ানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রস্তাবও পাশ করেছে। এর আগে পাঞ্জাব বিধানসভাও একই কাজ করেছিলো। তবে তাতে কী লাভ হবে? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএফ-এর এক সাবেক কর্মকর্তা বলেছেন, সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব মূলত কেন্দ্রের। যে কারণে বিধানসভার এই প্রস্তাব আইন বদলাতে পারবে না। তবে কেন্দ্রীয় নীতির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে। বুধবারই বিএসএফ-এর তরফ হতে বলা হয়েছে, স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে কথা বলেই তারা কাজ করবেন। তাদের ক্ষমতা আসলে বাড়ানো হয়নি। এখন দেখার বিষয়, পাঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি সীমান্ত অঞ্চলের চাপের সামনে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত বদলায় কি না।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।