দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোভিড পরিস্থিতি আবারও ঘোলাটে হচ্ছে। একদিকে রয়েছে ভাইরাসের আতঙ্ক, অপরদিকে কর্মক্ষেত্রের নানা দোলাচল তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে মানসিকভাবেও মারাত্মক চাপ বাড়ছে ব্যক্তিমানুষের উপর।
এই চাপের সরাসরি প্রভাব পড়ছে দাম্পত্য জীবনেও। কারণ হলো ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ফলে অনেকেই কাজ করতে হবে বাড়ি থেকেই। আবার অনেককেই কোভিড সংক্রমণ থেকে অন্যদের সুস্থ রাখতে যেতে হবে নিভৃতবাসে। এই টানাপড়েনের মাঝে কীভাবে বজায় থাকবে ব্যক্তিগত সমীকরণের বিষয়টি?
# আপনাকে মেনে নিতে হবে যে সময়টা সত্যিই কঠিন। এমন দীর্ঘ সময় ধরে এতোবড় লড়াই করার অভিজ্ঞতা অধিকাংশ মানুষের ছিলই না। যে কারণে দাম্পত্য জীবনের যে যে আলঙ্কারিক দিকগুলি থাকে তা বন্ধ রাখা খুব একটা সহজ নয়। তবু যে কোনও কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হলে প্রথমেই সেই পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনাকে ওয়াকিবহাল হতে হবে। তাই স্বাভাবিক সময় যা যা হতো সে সব যে এখনও হবে, এমনটি নাও হতে পারে।
# একসঙ্গে থাকলেও প্রত্যেক ব্যক্তিমানুষের কিছু নিজস্ব জায়গা দরকার। নিজেও সেই জায়গা নিন, সঙ্গীকেও সেই জায়গাটুকু দিতে হবে। দিনে কিছুটা সময় বের করুন যেটি একান্তই আপনার নিজস্ব। সেই সময় নিজের পছন্দের কোনও কাজ করুন। দেখবেন বাকি সময়টা সঙ্গীর সঙ্গে কাটানো অনেক সহজ হয়ে যাবে।
# নতুন নতুন কাজ করুন দুজনে এক সঙ্গে। ব্যস্ততার মধ্যে এই সময়টুকু হয়ে উঠতে পারে দারুন এক অভিজ্ঞতা। আপাত তুচ্ছ অনেক কাজও সেই মরুদ্যানে অমূল্য রতন হয়ে দেখা দিতে পারে অনেক সময়। ঘরোয়া খেলাধুলা, সন্তানের পড়াশোনাতে একসঙ্গে সহায়তা করা বা একসঙ্গে দাঁত মাজা ইত্যাদি। আপাত হাস্যকর এই সব টুকরো কাজেও বৃদ্ধি পেতে পারে সম্পর্কের উষ্ণতা। টবের গাছে পানি দেওয়া থেকে রাতের খাবার তৈরি, সবই করুন দুজনে হাত মিলিয়ে।
# যৌনতার চর্চা হতে হবে মন খুলে। সুখী দাম্পত্যের অন্যতম চাবিকাঠিই হলো সুস্থ যৌন জীবন। যারা কর্মক্ষেত্র নিয়ে সারা দিন ব্যস্ত সময় পার করেন তারা এই বাড়ি থেকে কাজের সময় নতুন করে, নতুনভাবে খুঁজে পেতে পারেন একে অন্যকে। তবে খেয়াল রাখবেন সঙ্গীর চাহিদা ও আপনার ইচ্ছের মধ্যে যেনো অবশ্যই ভারসাম্য থাকে। নয়তো হিতে বিপরীতও হতে পারে। যৌন মিলনে শরীরে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায় যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে।
# জীবনের গন্তব্যকে নতুন করে সাজিয়ে তুলুন। এই অতিমারি করোনা আমাদের জীবনকে নতুনভাবে দেখতে শিখিয়েছে। বুঝতে শিখিয়েছে জীবনের নতুন নতুন অর্থ। দু’জনে একসঙ্গে বসে ভেবে দেখুন বছর দুয়েক আগে জীবন নিয়ে যা আপনি ভাবতেন, এখনও তা ভাবেন কি না। তাই মন খুলে কথা বলুন, কথা শুনুনও। মুখোমুখি বসে, কথোপকথনের মাধ্যমে টানাপড়েনের একে অন্যের সহযাত্রী হওয়ার এমন সুযোগ যদি কাজে লাগাতে পারেন তাহলে দেখবেন অতিমারিও শাপে বর হয়ে দেখা দিতে পারে আপনার জীবনে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।