দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোরবানির পশু আগে থেকে নির্ধারিত হোক কিংবা কোরবানির দিনগুলোতে কেনা হোক- উভয় পদ্ধতিই বৈধ। যদি কোরবানির নিয়তে পশু ক্রয়কারী নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নাও হন, তাহলে ক্রয়ের মাধ্যমেও তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যায়।
কোরবানির জন্য যদি কেও বড় একটি পশু ক্রয় করেন ও সে নিয়ত করে যে অন্য কেও আগ্রহী হলে তাকেও কোরবানিতে অংশীদার করবেন- এমন ব্যক্তির জন্যও আগ্রহী ব্যক্তি পেলে শরিকানায় কোরবানি করা বৈধ হবে। যদি কেনার সময় কাওকে শরিক করার নিয়ত না থাকে, তবে পরবর্তী সময় কাওকে অংশীদার না করাই উত্তম।
এরপরও যদি কাওকে অংশীদার করতেই হয়, তবে অংশীদারকে অবশ্যই নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে। অংশীদার নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হলেও তাকে অংশীদার করা বৈধ হবে না। একইভাবে গরিব ব্যক্তি (যার নিসাব পরিমাণ সম্পদই নেই) কোনো পশু ক্রয় করলে তাতে অন্যকে অংশীদার করাও বৈধ নয়। যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই- এমন ব্যক্তি কোরবানির জন্য কোনো পশু ক্রয় করেন ও পরবর্তী সময় কাওকে শরিক করেন, তবে পরবর্তী সময় উপযুক্ত ব্যক্তির কোরবানি শুদ্ধ হয়ে যাবে। তখন কোরবানিতে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। তবে যে পরিমাণ অংশ গরিব ব্যক্তি অন্যের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন, তা পরিমাপ করে আরেকটি কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব হয়ে যাবে। যদি কখনও কোরবানির দিন শেষ হয়ে যায়, তাহলে এই পরিমাণ অর্থ গরিব অসহায় ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করে দিতে হবে। কারণ গরিব ব্যক্তি কোরবানির নিয়তে পশু কেনায় তার ওপর পুরো পশুটাই কোরবানি করা ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিলো। (কিফায়াতুল মুফতি: ৮/১৯৫, বেহেশতি জেওয়ার: ৩/৩৯)
অংশীদার এবং আকিকা
বড় পশুতে (যাতে শরিকে কোরবানি করা বৈধ) কোরবানি ও আকিকার নিয়তে অংশীদার হওয়াও বৈধ। শর্ত হলো, শরিকরা কোরবানি কিংবা আকিকার বাইরে অন্য কোনো নিয়ত করবেন না। আর দ্বিতীয় শর্ত হলো, কারও অংশ এক- সপ্তমাংশের চেয়ে কম হবে না। একইভাবে কোনো অংশীদার যদি কোরবানির নিয়ত করেন এবং কোনো অংশীদার যদি আকিকার নিয়ত করেন, তবে তাদের একত্রে কোরবানি করা বৈধ। (আজিজুল ফাতাওয়া : ১/৭১৮, ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৩২৬)
পশু জবাই করার পর অংশীদার হওয়া যাবে?
কোরবানির পশু জবাই হওয়ার পর তাতে অংশের কোনো পরিবর্তনই বৈধ নয়। জবাইয়ের পর অংশীদার হওয়ার জন্য কেও অর্থ দিলে সেটি ফেরত দেওয়া আবশ্যক। (আজিজুল ফাতাওয়া : ১/৭১৯)
শরিকানার অর্থে কমবেশি করলে কী কোরবানি হবে?
যদি একাধিক ব্যক্তি অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি করতে চান, তাহলে তারা সমানভাবে পশুর মূল্য এবং অন্যান্য খরচ পরিশোধ করবেন। তবে যদি স্বেচ্ছায় কোনো অংশীদার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেন, তাহলে তা অবৈধ হবে না। (আজিজুল ফাতাওয়া : ১/৭২৪)
স্ত্রী এবং সন্তানের পক্ষে স্বামী ও পিতার কোরবানি
যদি কোনো অঞ্চলের প্রচলন এমন হয় যে, সেখানে স্বামী তার স্ত্রীর পক্ষ হতে এবং পিতা তার বালেগ সন্তানের পক্ষ হতে কোরবানি করেন। স্ত্রী ও সন্তান এই প্রচলনের কথা সম্পর্কে যদি অবগত থাকেন। তবে পিতা এবং স্বামীর কোরবানি তাদের পক্ষে যথেষ্ট হবে। সন্তান এবং স্ত্রীর স্পষ্ট কোনো অনুমতির প্রয়োজন হবে না। প্রচলন ব্যাপক না হলে সেখানে স্ত্রী এবং সন্তানের ওয়াজিব কোরবানি আদায়ের জন্য স্পষ্ট অনুমতি নেওয়া তখন আবশ্যক। নফল কোরবানির জন্য অনুমতির কোনো প্রয়োজন হবে না। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৫/২০৭)
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।