দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময় মোবাইল ফোন ছাড়া যেনো দুনিয়ায় অচল। কিন্তু এই মোবাইল ফোনের ইতিহাস আমাদের অনেকের অজানা। কিভাবে এলো মোবাইল ফোন আর প্রথম কে কথা বলেছিলেন এই মোবাইল ফোনে?
আপনি কী কখনও চিন্তা করে দেখেছেন যে, এই মোবাইল ফোন কীভাবে আবিষ্কার হলো? আজকে আমরা এই মোবাইল ফোন আবিষ্কারের ইতিহাস জানবো।
প্রথম মোবাইল ফোন তৈরি হয় ১৯৭৩ সালে। আর এটি তৈরি করা হয় আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে। এটি তৈরি করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মার্টিন কুপার। সে কারণে তাকেই বলা হয় মোবাইল ফোনের জনক।
মোবাইলের জনক মার্টিন কুপার কাজ করতেন তখনকার এক ছোট টেলিকম কোম্পানি মোটরোলায়। তবে তার স্বপ্ন ছিল- এমন একদিন আসবে যখন সবার হাতেই থাকবে তার নিজস্ব ফোন, সেই ফোনে যে কোন সময় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।
সেই সময় টেলিফোন মানেই ছিল এমন একটা জিনিস, যা মানুষের অফিসের টেবিল ও বাড়িতে তারের সঙ্গে যুক্ত থাকতো। সে কারণে সাধারণ মানুষের কাছে মোবাইল ফোনের ধারণা ছিলো অনেকটা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতোই। ডিক ট্রেসি নামে আমেরিকান একটি কমিকের চরিত্রগুলো এক ধরনের ভিডিও হাতঘড়ির সাহায্যে পরস্পর যোগাযোগ করতো, সেটি দেখেই প্রথমবার মার্টিন কুপারের মাথায় মোবাইল ফোনের চিন্তাটা আসে। ঠিক সেই জিনিসটাই মার্টিন কুপার এর নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি দল মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে তৈরি করেন।
সে আজকের কথা নয়, ৪৮ বছর পূর্বে ১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে, নিউইয়র্কের হিলটন হোটেলে প্রথম মোবাইল ফোনের মডেল উপস্থাপন করা হয়। প্রথম মোবাইল ফোনটি ছিল ১০ ইঞ্চি লম্বা ও ২ ইঞ্চি চওড়া ও প্রায় ৪ ইঞ্চি মোটা। সেই মোবাইল ফোনটির ওজন ছিল এক কেজিরও বেশি। তখন মাত্র ২০ মিনিট কথা বললেই ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যেতো। তাই সেই ফোন দেখে অনেকেই হাসাহাসি করেছেন। তবে সত্যিকার অর্থে ওই সময় এরকম একটি ফোন তৈরি করা ছিল এক প্রকার অসম্ভব চ্যালেঞ্জ বটে।
পৃথিবীর ইতিহাসের মোবাইল ফোন দিয়ে প্রথম কলটিও করেছিলেন মার্টিন কুপার নিজেই। তিনি নিউইয়র্কের ৬ষ্ঠ অ্যাভিনিউতে হাঁটতে হাঁটতে এ.টি অ্যান্ড টি কোম্পানিতে কর্মরত তার এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুকে প্রথম ওই কলটি করেছিলেন।
এ.টি অ্যান্ড টি আবিষ্কৃত সেলুলার টেকনোলজি নামে একটা প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে মোবাইল ফোন আবিষ্কার করা হয়েছিল। হাতে করে ফোন নিয়ে ঘোরার কথা এ.টি অ্যান্ড টি কখনও ভাবেনি। তারা এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছিল মূলত গাড়িতে টেলিফোন সংযুক্ত করার জন্যই। তবে ছোট্ট কোম্পানি মটোরোলা তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো টেলিকম কোম্পানি এ.টি অ্যান্ড টির কল্পনার সীমানা ছাড়িয়ে গেছেন। সবার আগে প্রথম মোবাইল ফোন বাজারে আনে মটোরোলা কোম্পানিই! তবে প্রথম মোবাইল ফোনটি বাজারে আসতে আরও ১০ বছরের মতো সময় লেগেছিলো। ১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মতো বাজারে আসে মটোরোলা ডাইনা টিএসি (DynaTAC) মডেলের মোবাইল ফোনটি।
ওই মোবাইলের দাম ছিল ৪ হাজার ডলার, বর্তমান সময় যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকার বেশি! তা ছাড়াও তখন কল রেট ছিল অনেকটা বেশি। সেই যুগে মোবাইল অনেকটা বড়োলোকদের খেলনা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসতে। এই মোবাইলটি অনেকের কাছেই ইটের মতোই, আবার কারও কাছে জুতার মতো দেখতে মনে হতো। তাই অনেকেই এটিকে বলতো দি ব্রিক। আবার কেও কেও বলতো সু ফোন। তবে মার্টিন কুপার নাম দিয়েছিলেন ডায়নামিক অ্যাডাপটিভ টোটাল অ্যারিয়া কভারেজ; সংক্ষেপে যাকে বলতেন ডায়নাট্যাক। সেই মোবাইল ফোন যে মানুষের জীবনে এতোটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা হয়তো কেও তখন উপলব্ধিও করেননি!
বর্তমানে মোবাইল ফোনে রেডিও, টিভি, মিউজিক প্লেয়ার, ক্যামেরা, ইন্টারনেটসহ সব কিছুই আছে! বর্তমান পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশের বেশি লোকই মোবাইল ফোন যোগাযোগের আওতায় এসেছে এবং ৫১১ কোটিরও বেশি মানুষ নিয়মিতবাবে এই মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে!
এক সময় যে মটোরোলা দিয়ে শুরু হয়েছিলো বর্তমান বিশ্বের স্মার্টফোন বাজারে ৭৬ শতাংশ দখল করে রেখেছে মাত্র ১০টি কোম্পানি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা যেমন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারছি; মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার উদ্ভাবিত ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পৃথিবী থেকে সৌরজগতের বাইরে পর্যন্ত যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে এর মাধ্যমে।
আর এই প্রযুক্তি দিয়েই ১৯৭৭ সালে নাসা ভয়েজার মিশন পরিচালনা করে। এখন পর্যন্ত পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থান করা মানুষের তৈরি বস্তুই হলো ভয়েজার-১। উৎক্ষেপণের ৪৪ বছর পরেও এখন পর্যন্ত ভয়েজার সক্রিয় রয়েছে।
আজকের এই একুশ শতকে এসে মোবাইল ফোন আমাদের জীবন-যাপন পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে। এখন মোবাইল ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও চলেই না! ভবিষ্যতে স্মার্টফোনে আরও কোন কোন চমকপ্রদ প্রযুক্তি যুক্ত হয়; তা এখন শুধুই দেখার অপেক্ষায় পৃথিবী। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট অবলম্বনে একুশে টেলিভিশন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।