দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্মার্টফোনের যুগ হলেও অনেকেই এখন স্মার্টফোন ব্যবহার না করে বাটন ফোন ব্যবহার করেন। তাই এক সময়ের সেই বাটন ফোন মনে হচ্ছে আবারও জনপ্রিয় হতে যাচ্ছে।
অনেকেই মনে করেন তার একটা ফোন দরকার কেবল যোগাযোগ রক্ষার জন্য। আর সেজন্য একটা ফিচার ফোন ব্যবহার করলেই চলে। কারণ স্মার্টফোনের অ্যাপের পেছনে যে সময় ব্যয় হয়, সেটি পড়াশোনা বা পরিবার, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কাটাতে পারেন অনেকেই।
মজার বিষয় হলো, ইউরোপ আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে হঠাৎ করেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ফিচার ফোন। আমরা যাকে বলে থাকি ‘বাটন’ ফোন। স্মার্টফোনের সুযোগসুবিধা নেই বলে বাজারে এগুলো ‘ডাম্ব’ কিংবা ‘বোবা ফোন’ হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে অনেকের কাছে। একুশ শতকের শুরুর দিকে এই ফোনগুলো ছিল সবারই ভরসা। বহুল জনপ্রিয় নকিয়া ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের বাটন ফোনগুলো তখন ছিল যেনো আভিজাত্যের এক প্রতীক। সেই ফোনগুলো এখন আবার দেখা যাচ্ছে হাতে হাতে। কেবল পুরাতন প্রজন্মই নয়, নতুন প্রজন্মেরও হাতে হাতেও দেখা যাচ্ছে এইসব ফোন। তাদের চাহিদার দিকে নজর রেখে বিভিন্ন কোম্পানি তৈরি করছে বাহারি নানা রকমের বাটন ফোন।
নকিয়ার ফিচার ফোন
বাটন ফোনগুলো হলো মূলত মৌলিক হ্যান্ডসেট, যার কার্যকারিতা একটি স্মার্টফোনের তুলনায় বেশ সীমিত। আপনি শুধুমাত্র কল ও এসএমএস করতে পারেন এই ফোনে। বড়জোর এফএম রেডিও শুনতে পারবেন, কম রেজুলেশনের ছবি তুলতে পারবেন বা স্নেক এর মতো সেই প্রাগঐতিহাসিক যুগের দুই একটা গেমও খেলতে পারবেন। তবে এইসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন সেই ডাম্বফোনের যুগেই।
ফিচার ফোনগুলো ধীরে ধীরে প্রবেশ করছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে। সফটওয়্যার সংস্থা ‘এসইমারশ’ এর একটি রিপোর্ট অনুসারে দেখা যায়, ২০১৮ সালের পর থেকে গুগলে ফিচার ফোনের বিষয়ে সার্চ করার পরিমাণ প্রায় ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালে ১০০ কোটির বেশি ফিচার ফোন বিক্রি হয়। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে যার সংখ্যা ছিল ৬০ কোটি।
এই বিষয়ে অ্যাকাউন্টেন্সি গ্রুপ ডেলয়েটের একটি গবেষণায় বলা হয় যে, যুক্তরাজ্যে বর্তমানে প্রতি ১০ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে একজনের হাতে দেখা যাচ্ছে একটি করে বাটন ফোন। বিষয়টি এমনও না যে, তারা স্বল্প শিক্ষিত শ্রমিক বা অসচ্ছল। দেখা যাচ্ছে ধনাঢ্য পরিবারের শিক্ষার্থী, অনেক উপার্জন করা চাকরিজীবী নারী, পুরুষ বা ভিআইপিদের হাতে হাতে দেখা যাচ্ছে এই ফোন। এমনকি ভারতেও ৪০ কোটির বেশি মানুষ এখনও ব্যবহার করছে এই ফোন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও হু হু করে বাড়ছে এইসব ফোনের বিক্রি। নতুন প্রজন্মের একটি বড় অংশ হাতে রাখছে কেবল একটি ফিচার ফোন। অনেকেই মনে করছে যে, এটা তাদের জন্য আনস্মার্ট নয়, বরং আরও বেশি স্মার্ট করে তুলছে। গবেষকরা বলছেন যে, স্মার্টফোন মানুষের বুদ্ধিদীপ্ততার ওপর নেতিবাচক প্রভাবও ফেলছে, নিজের মেধা ব্যবহারকেও সীমিত করে ফেলছে, অপরদিকে স্বাস্থ্যের ক্ষতি তো রয়েছেই।
ব্রিটিশ মোবাইল বিশেষজ্ঞ আর্নেস্ট ডকু মনে করেন, মানুষের মন আসলে পরিবর্তনশীল। বাটনফোন থেকে যখন স্মার্টফোনের যুগ, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ শুরু হলো, তখন মানুষের মনে হয়েছিল এটাই বুঝি তাদের জীবন। তবে অনেকের কাছে বর্তমানে এইসব ডিজিটাল যোগাযোগ বা ডিজিটাল বিনোদন একঘেয়েমিই হয়ে উঠেছে। তাই ফিরে যাচ্ছেন ফিচার ফোনে। নিজেকে আরও বেশি করে সময়ও দিচ্ছেন। আবার কেও কেও নস্টালজিয়া থেকেও ফিরে যাচ্ছেন এই ফোনে। তিনি বলেছেন, ২০২০ সালে নোকিয়া ৩৩১০ সেটটি পুনরায় বাজারে ছাড়ার পর সর্বাধিক বিক্রি হওয়া মোবাইল ফোনের তালিকায় স্থান করে নেয়, যা সত্যিই নতুন কিছুর ইঙ্গিত বহন করছে।
তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ফোন যতো স্মার্ট হয়েছে, মানুষের প্রাইভেসিও ততোই সংকটে পড়েছে। সময় নষ্ট বা স্বাস্থ্যঝুঁকির বাইরে আপনি জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি কতো জায়গায় শেয়ার করেছেন তা হয়তো মনেই করতে পারবেন না। এইসব তথ্য বা ছবি অপব্যবহারের সম্ভাবনাও একেবারে কম নয়। এইসব কারণেও অনেকেই স্মার্টফোনকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে ফিরে যেতে চাইছেন সেই এক সময়ের ‘বাপ-দাদার আমলের’ বাটন ফোনে!
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।