দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ন্যাটোর দু’দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে। এই সম্মেলনকে ঘিরে ইউক্রেনের ছিল ন্যাটোতে যোগদানের দীর্ঘ এক প্রতীক্ষা। যুদ্ধকবলিত দেশটির নাগরিকদের মধ্যেও ছিল টানটান উত্তেজনা। তবে ইউক্রেনের এই আশায় গুড়েবালি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
৯ জুলাই এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, জোটের সদস্য হতে এখনও উপযুক্ত নয় কিয়েভ। কারণ হলো পশ্চিমা সামরিক জোটের সদস্য হতে হলে সদস্য দেশের অনুমতি প্রয়োজন। ঠিক একই সুরে তাল মিলিয়েছেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানও। গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইউক্রেন যেনো ন্যাটোতে যোগ দিতে পারে সেই লক্ষ্যে সম্মেলনে একটি সংস্কারের পথও তৈরি করা হবে। তবে দেশটি ঠিক কখন ন্যাটোতে যোগ দেবে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন সান্ত্বনাবাণীতে মূলত ফুঁসে উঠেছে পুরো ইউক্রেন। খবর এএফপি ও রয়টার্স।
এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ইউক্রেন। ন্যাটোভুক্ত হতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘অনির্দিষ্টকাল’র বাঁধায় রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। তাৎক্ষণিক টুইটার বার্তায় সময়সূচির ‘অনিশ্চয়তাকে দুর্বলতা’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘আমি খোলাখুলিভাবে এই বিষয়ে আলোচনা করবো।’ সেইসঙ্গে জোটে যোগদানের একটি সুস্পষ্ট সময়সূচি প্রদানে কিছু ন্যাটো নেতার অনিচ্ছাকেও ‘অযৌক্তিক’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন ভলোদিমির জেলেনস্কিও। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকেও এই বিষয়ে আরও জোর দেবেন জেলেনস্কি।
এদিকে মার্কিন ইশারা বুঝে বক্তব্য পাল্টে ফেলেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলেনবার্গও। তিনি বলেছেন, ‘সম্মেলনে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হবে। ২০০৮ সাল থেকে জোটে আসতে চেষ্টা করছে ইউক্রেন। তারা অনেকদূর এগিয়েছেও। যদিও ইউক্রেন কোনো একসময় অন্তর্ভুক্ত হবে বলে প্রাথমিক ইঙ্গিত দিয়েছিল ন্যাটো। এখন ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার কাছাকাছি রয়েছে ইউক্রেন। আমি মনে করি যে, সিদ্ধান্ত প্রতিফলনের সময় এসেছে।’
উল্লেখ্য, মাত্র সপ্তাহ খানেক আগেও স্টলেনবার্গই বলেছিলেন যে, আসছে ন্যাটো সম্মেলনেই সদস্যপদ পেতে পারে ইউক্রেন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org