দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধুত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কারণ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে ইউক্রেনকে সমর্থন করেছেন এবং অস্ত্রও দিচ্ছেন। তাহলে পুতিনের সঙ্গে কীভাবে বন্ধুত্ব হতে পারে?
মস্কো কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে অপমানও করেছেন এরদোগান। বিশ্লেষকরা বলছেন যে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সামনে এইসব মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায়ও নেই। কারণ হলো, পুতিনের লক্ষ্য পূরণে তুরস্ক অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ।
এ সপ্তাহে এরদোগান তার দেশে থাকা ইউক্রেনের আজভ রেজিমেন্টের ৫ জন কমান্ডারকে ইউক্রেন ফেরার অনুমতি দিয়েছেন। এইসব সেনাকে রাশিয়া বন্দি করেছিল এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে তাদেরকে মুক্তিও দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্তই ছিল, যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে তুরস্কেই থাকতে হবে। আজভ রেজিমেন্টের এই ৫ কমান্ডার গত বছরের মে মাসে মারিওপোলের যুদ্ধে রাশিয়ার হাতে বন্দি হয়েছিলো। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পুতিনের বন্ধু ভিক্টর মেদভেদচুকের বিনিময়ে মুক্তি পাওয়া শত শত আজভ যোদ্ধার মধ্যে ছিলেন এই ৫ কমান্ডার। এইসব সেনাকে ইউক্রেনে ফেরার অনুমতিকে রাশিয়া পেছন থেকে ছুরিকাঘাত হিসেবেই দেখছে।
এদিকে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন যে, তুরস্ক থেকে এইসব আজভ রেজিমেন্ট কমান্ডারকে ইউক্রেনে প্রত্যাবর্তন করতে দেওয়া বিদ্যমান চুক্তির শর্তাবলির সরাসরি লঙ্ঘন ছাড়া অন্য কিছুই নয়। এই মুক্তি তুরস্কের ওপর তার ন্যাটো মিত্রদের দেওয়া চাপেরই ফল।
পেসকভের এই ধরনের মন্তব্যে যেভাবে এরদোগানের কর্মকাণ্ডের জন্য দোষারোপ করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে তাতে করে মস্কো-আঙ্কারার মধ্যে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক রক্ষার পরিকল্পনা কোন দিকে যায় সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে এটি রাশিয়ার কঠোর নীতিতে চলার ইঙ্গিতই দেয়। মস্কো তুরস্ককে তার একটি আঞ্চলিক গ্যাস হাব হিসেবেও পেতে চায়। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তুরস্ক পশ্চিমাদের দ্বারা বহিষ্কৃত রুশ অলিগার্চদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থলও বটে।
সে কারণেই রাশিয়ার ফেডারেশন কাউন্সিলের ‘বন্ধুত্বহীন দেশের’ তালিকায় তুরস্ককে যুক্ত করার হুমকি পুতিনের অনুমোদন দেওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নাই বলা যায়। তারপরও, আজভ রেজিমেন্টের ৫ জন কমান্ডারের ইউক্রেনে প্রত্যাবর্তন রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য অপর একটি বড়সড় অপমান হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ হলো, তারা দেশে ফিরে আবারও রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধেই লড়াই চালাবে।
রাশিয়ায় ভাগনার বিদ্রোহের ঠিক পর পরই এরদোগানের এমন পদক্ষেপ, এটি পুতিনের রাজত্বের ওপরেও ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। রুশ কট্টরপন্থিরা পুতিনের প্রিয় বন্ধু এরদোগানের সঙ্গে পুতিনের ‘বিশেষ সম্পর্ক’ নিয়ে তাইতো প্রশ্ন তুলতেই পারেন। ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরুও করেছেন অনেকেই। সূত্র: ভোরের কাগজ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org