দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২৪ জুলাই বেসিস-এসইআইপির উদ্যোগে রাজধানীর ড্যাফোডিল প্লাজায় অনুষ্ঠিত হলো তথ্যপ্রযুক্তি জব ফেয়ার, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ও সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের এসইআইপি প্রকল্পের উপ নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোঃ মাহফুজুল আলম খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের এসইআইপি প্রকল্পের সহকারী নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (উপ সচিব) মোঃ রুহুল আমিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বেসিসের সহ-সভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান।
ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং পর্বে চাকরীপ্রার্থীদের উদ্দ্যেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন বেসিসের জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরী হিমিকা, কর্পোরেট ট্রেইনার ডন সামদানী ও ব্রেন স্টেশন ২৩–এর প্রতিষ্ঠাতা-সিইও রাইসুল কবির।
চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখরিত এই জব ফেয়ার-এ ৩৫ কোম্পানী ২০০ এর অধিক শূন্য পদে চাকরি দিতে প্রার্থীদের হতে জীবন বৃত্তান্ত জমা নেন। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজন চলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। চাকরিপ্রত্যাশীরা নিজেদের পছন্দমতো কোম্পানির স্টলে গিয়ে পছন্দের ক্যাটাগরিতে আবেদন করেন। মেলা চলাকালীন সময়েই কিছু কোম্পানী ইন্টারভিউ এর মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশিত প্রার্থীদের চাকরী নিশ্চিত করেন ও কিছু কোম্পানী পরবর্তীতে পরীক্ষার নেওয়ার জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেন।
বেসিস ২০১৫ থেকে এই প্রকল্পের একটি গর্বিত অংশীদার হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে কাজ করছে। ২০১৫-২০১৮ পর্যন্ত বেসিস-এসইআইপি ট্রাঞ্চ-ওয়ান ও ২০১৮-২০১৯ পর্যন্ত ট্রাঞ্চ-ওয়ান এডিশনাল বাস্তবায়ন করা হয়। এর মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার তরুণ শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পায়। ২য় দফায় বেসিস-এসইআইপি ট্রাঞ্চ-থ্রি ২০২০ সালে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কোভিডের কারণে ২০২১ এর জুন থেকে কার্যত কার্যক্রম চালু হয়। প্রাথমিকভাবে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে আরও ৫০০ বাড়িয়ে প্রায় ৮ হাজারের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে বেসিস বেসিস-এসইআইপি। আগামী ডিসেম্বর ২০২৩ অর্থাৎ চলতি বছরে শেষ হয়ে যাচ্ছে এই প্রকল্প।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ মাহফুজুল আলম খান বলেন, “আপনাদের মতো তরুণ উদ্যমী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দেন ও সেটি বাস্তবায়ন হয়। এরপর তিনি স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দেন আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার হলেন আপনারা। আপনাদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। কারণ প্রত্যেকটা সেক্টরেই দরকার তথ্য প্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তির কাঁচামাল হচ্ছেন আপনারা। তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ মানব সম্পদের মাধ্যমেই এক্ষেত্রটাকে আরও যথোপযুক্ত করা সম্ভব।”
মোঃ রুহুল আমিন, বলেন, “এমন কোন সেক্টর নেই যেটিতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। আজকে এখানে যারা সার্টিফিকেট পাচ্ছেন তাদের যাত্রা এখানেই শেষ নয় বরং এখান থেকে শুরু মাত্র। সারা বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তির বিশাল বাজার রয়েছে ও তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ মানুষদের চাহিদাও রয়েছে অনেক। আপনাদের নিজেদেরকে যোগ্য প্রমাণ করে সেই জায়গাতে পৌঁছাতে হবে।”
বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছেন। যার জন্য ৪টি পিলার রয়েছে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনোমি ও স্মার্ট গভার্নমেন্ট। আমাদের কাজের জায়গা রয়েছে দুটি পিলার গড়তে। একটা স্মার্ট সিটিজেন, আরেকটা স্মার্ট সোসাইটি। স্মার্ট র্সিটিজেন হলেই স্মার্ট সোসাইটি গড়া সম্ভব। আমরা সবাই স্মার্ট সিটিজেন হয়ে স্মার্ট সোসাইটি তৈরি করতে পারি ও এরপর আমরা আমাদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের মাধ্যমে স্মার্ট ইকোনমি গড়ে তুলবো।”
অনুষ্ঠানে চাকরি প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে রাসেল টি আহমেদ বলেন, প্রত্যেককে স্বপ্ন দেখতে হবে ও স্বপ্নের পিছনে ছুটতে হবে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে- তাহলে স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।
বেসিসের সহ-সভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান বলেন, “এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ জনসম্পদ তৈরি করা। প্রশিক্ষণার্থীদের স্টাইপেন্ড ও প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থানে সহায়তা করা। এই প্রকল্পে ৭১৫০ জন নতুন গ্রাজুয়েট ও ৮০০ আপস্কিলিং ট্রেনিং পাচ্ছে। ট্রাঞ্চ-থ্রি প্রকল্পে প্রশিক্ষিতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬০.৭৫ শতাংশের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে। যদিও বরাবরই মেয়েদের তথ্যপ্রযুক্তিতে সম্পৃক্ত করা আমাদের প্রচেষ্টা থাকে, তদুপরি এবার আমরা দুটো শুধুমাত্র মেয়েদের ব্যাচসহ ২৩ শতাংশ মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিতে পেরেছি।” খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org