দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের প্রতিদিন কিছু অভ্যাস রয়েছে যা পরিণতই করে থাকি। প্রত্যহিক জীবনের কোন অভ্যাসগুলো মারাত্মক কিছু অসুখ ডেকে আনতে পারে তা নিশ্চয়ই আপনার জানা নেই? আজ জেনে নিন বিষয়টি।
দৈনন্দিন জীবনের ধারাবাহিক অনিয়ম নানা ধরনের অসুখ-বিসুখের উৎসই হতে পারে। শরীরের প্রতি অযত্নের হাত ধরেই জন্ম নেয় নানা ধরনের রোগ-বালাই। তাই সুস্থ থাকতে হলে কয়েকটি নিয়মে জীবনকে বাঁধাটা জরুরি। ব্যস্ত জীবনে সব নিয়ম সব সময় মানা সম্ভব হয় না এটি ঠিক। তবে একেবারে সাধারণ কিছু অভ্যাসে নিজেকে অভ্যস্ত না করালে মুশকিলও হতে পারে। তবে প্রাত্যহিক জীবনের কোন অভ্যাসগুলো মারাত্মক কিছু অসুখ ডেকে আনতে পারে সেটি কী আপনি জানেন? আজ জেনে নিন বিষয়টি।
পানি কম খাওয়া
কাজের চাপে পানি খাওয়ার কথা মনেই থাকে না অনেক সময়। কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর পানি খাওয়া জরুরি। এতে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হয় না। তবে নিয়ম মেনেই পানি খাচ্ছেন, সেই সংখ্যাটিও অত্যন্ত কম। সুস্থ থাকতে হলে পানি খাওয়ার কোনও বিকল্প নেই। কারণ পানির অভাবে কঠিন রোগ হওয়ারও ঝুঁকি থেকেই যায়। নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে বেশি করে পানি খাওয়া ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।
কম ঘুমোনো
নিজেকে সুস্থ রাখার আরও একটি ধাপ জিনিস হলো বেশি করে ঘুমোনো। দৌড়ঝাঁপের জীবনে ঘুমই সবচেয়ে কম হয়ে থাকে। কাজের চাপ তো রয়েছেই, সেইসঙ্গে মানসিক অস্থিরতাও ঘুম কম হওয়ার একটি কারণ। দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের ঘাটতি অসুস্থতার ঝুঁকি আরও বাড়ায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে রক্তচাপের মাত্রা ঠিক রাখা সব কিছুই সম্ভব- যদি ঘুম ঠিকঠাক মতো হয়।
রাত করে খাবার খাওয়া
সুস্থ থাকার জন্য চিকিৎসকরা রাত ৮টার মধ্যে খেয়ে নিতে বলেন। এতে হজমও ভালো হয়। গ্যাসের কোনও ভয়ও থাকে না। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে পারলে তারচেয়ে ভালো আর কিছু হতেই পারে না। তবে সকলের পক্ষে তা সম্ভবও হয় না। অনেকের বাড়ি ফিরতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। রাতের খাবার খেতে আরও বিলম্ব হয়। রাত করে খাওয়ার অভ্যাসে তাই ভিতরে ভিতরে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে শরীর।
শরীরচর্চা না করা
নিয়মিত ব্যায়াম, যোগাসনের উপকারিতা বহু। সারা দিনে অন্তত যদি ১০ মিনিট শরীরচর্চা করেন, তা হলেও সুফল পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেরই শরীরচর্চার সঙ্গে একেবারে কোনও সম্পর্ক নেই। জিমে যাওয়া তো দূর, হাঁটাচলাও করেন না অনেকে। শরীরচর্চা না করার ফলে শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগবালাই।
বাইরের খাবার খাওয়া
৮ থেকে ৮০, বাইরের খাবারের প্রতি ঝোঁক কমবেশি সকলের রয়েছে। প্রতিনিয়ত এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শরীরে জমা হচ্ছে ফ্যাট। আর বাড়ছে ওজন। স্থূলতার হাত ধরে এক সময় জন্ম নিচ্ছে কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো নানা ধরনের রোগ-বালাই। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org