দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঠাণ্ডা লেগে গলাব্যথা হওয়ার সমস্যা আজকাল ঘরে ঘরে দেখা যাচ্ছে। আর এই গলাব্যথা বেশ অস্বস্তির। এই সময় ঘরোয়া কিছু টোটকা দ্রুত সুস্থ করে তুলতে পারে গলাব্যথা। ঘরের হেঁশেলের কিছু জিনিসই দিতে পারে এর সমাধান।
বর্ষাকাল মানেই যে মোহনীয় একটা পরিবেশ তা কিন্তু নয়। বর্ষায় বাড়ে সর্দি-কাশির নানা ঝুঁকি। যাদের ঠাণ্ডালাগার ধাত রয়েছে, বৃষ্টির পানি গায়ে পড়তে না পড়তেই শুরু হয়ে যায় হাঁচিকাশি, গলা খুসখুসে পরিস্থিতি। আবার সচরাচর যাদের ঠাণ্ডা লাগে না, এই বৃষ্টির মৌসুমে তারাও যেনো কাহিল হয়ে পড়েন এই ধরনের সমস্যার কারণে। সবার কাছে সব সময় ছাতা থাকে না। যে কারণে খামখেয়ালি বৃষ্টির দাপটে মুশকিল হয়ে পড়ে- অর্থাৎ ভিজতে হয়। আএই মৌসুমে এক বার জ্বরে পড়লে, সহজে সুস্থ হওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। শুধু জ্বরই নয়, সেইসঙ্গে গলাব্যথাতেও ভুগছেন অনেকেই। এমন অবস্থায় শক্ত জিনিস তো বটেই, এমনকি তরল খাবার খেতেও অসুবিধা হয়। এই ধরনের উপসর্গ খুব মৃদু হলেও ছা়ড়তে বেশ সময়ও লাগে। ওষুধ খেয়েও যে কোনও উপকার পাওয়া যাচ্ছে, তা কিন্তু নয়। তবুও অনেকেই নিয়ম করে ওষুধ খেয়ে যান। তবে এ ছাড়া সুস্থ হয়ে ওঠার উপায়ই বা কী। উপায় যে একেবারেই নেই, তা কিন্তু নয়। এই সময় ঘরোয়া কিছু টোটকা কাজে লাগতে পারেন। হেঁশেলের কিছু জিনিস দিতে পারে এই সমস্যা থেকে মুক্তি।
আবার এই ধরনের সমস্যায় পড়লে অনেকেই বুঝতেই পারেন না, দ্রুত ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা দূর হবে কোন ঘরোয়া টোটকায়। তবে দু’টি উপাদান দ্রুত ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা কমাতে পারে। কমিয়ে দিতে পারে গলাব্যথাও। বাঙালিদের হেঁশেলে হলুদ এবং মধু প্রায় মজুত থাকে। এই দু’টি উপাদানই এই সময় সাহায্য করতে পারে। হলুদ ও মধু দু’টিতেই রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান। সেইসঙ্গে প্রদাহজনিত সমস্যাও দূর করে এই দু’টি উপাদান। এই দুটি একসঙ্গে খেলে প্রদাহ কমে। একইসঙ্গে গলাব্যথা, সর্দি-কাশিও কমে যায়।
একটি কাপে আধা চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিন দু’চামচ হলুদ ও দু’ফোঁটা লেবুর রস। মিশ্রণটি তৈরিও করে রাখতে পারেন। ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা হলে দিনে তিন বার আধা চামচ করে এটি খেতে হবে। নিয়ম করে খেলে আশা করা যায় সুস্থ হয়ে উঠবেন খুব দ্রুততর সময়ের মধ্যে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org