দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিভিন্ন লক্ষণ দেখেই বোঝা যায় ঠাণ্ডা লেগেছে। এই পরিস্থিতি যাতে কোনোভাবেই বাড়াবাড়ি আকার ধারণ না করে, সেজন্য এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়া মাত্রই যদি কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তাহলে সমস্যা নেই।
বর্তমান সময় ঘরে ঘরে জ্বর, নাক টানা, সর্দির সমস্যা লেগেই থাকে। তবে ইদানীং সর্দি-জ্বর মৌসুমি রোগ নয়। কারণ অনেকেই সারা বছরই ঠাণ্ডা লাগার সমস্যায় ভোগেন। বৃষ্টিতে ভিজেও ঠাণ্ডা লাগতে পারে, তেমনই প্রচণ্ড রোদে ঘাম বসেও অনেক সময় হালকা জ্বর, সর্দির মতো সমস্যা হতে পারে। তবে এই ধরনের সমস্যা যে হতে পারে, তা আগে থেকেই বোঝা যায়। নাকবন্ধ, গলাব্যথা, কাশি, হালকা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণও জানান দেয় যে, ঠাণ্ডা লেগেছে। তাই শুধু সাবধান নয়, একই সঙ্গে সতর্কও থাকতে হবে এই সময়। ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা এড়িয়ে গেলে চলবে না। বরং গুরুত্ব দিয়েই তা দেখতে হবে।’’
ঠাণ্ডা লাগার লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়া মাত্রই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি?
বেশি করে পানি খান
শরীরে যদি পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে, তাহলে প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। যে কারণে রোগের সঙ্গে লড়াই করা অনেক বেশিই সহজ হয়ে যায়। তাই ঠাণ্ডা লেগেছে মনে হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম
সাধারণত ঠাণ্ডা লাগলে শরীর ভিতর থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়াটা জরুরি। ভারি কোনও কাজ করলে সমস্যাও হতে পারে। শারীরিক সমস্যা আরও বেড়েও যেতে পারে। তাই সেই ঝুঁকি না নিয়ে বরং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
সুষম খাবার খান
ঠাণ্ডা লাগলে স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়ায় বেশি জোর দিতে হবে। বাইরের খাবার যতো কম খাওয়া যাবে- ততোই ভালো। বেশি করে বাড়ির খাবার খান। তেল-ঝাল-মশলাদার খাবার না খাওয়াই উত্তম।
খেতে পারেন মধু
ঠাণ্ডা লেগেছে বুঝতে পারলে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। সর্দি-কাশি সেরে যাবে খুব দ্রুত। মধু প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও ভিষণ কার্যকরী। যে কারণে জ্বর জ্বর মনে হলেই মধু খেয়ে নিলে পরিস্থিতি থাকবে নিয়ন্ত্রণেই। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org