দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গ্যাস, অ্যাসিডিটি কিংবা পেট ফাঁপার মতো একাধিক পেটের সমস্যায় ভুগতে হয় অনেককে? তাহলে যতো দ্রুত সম্ভব কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করুন। এতেই উপকার পাবেন চটজলদি।
বাঙালিদের মধ্যে পেটের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তির সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। আতস কাচ নিয়ে খুঁজতে বের হলে প্রায় প্রত্যেক পরিবারেই এক না একজন গ্যাস, অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত রোগী আপনি খুঁজে পেতে পারেন। তাই এই সমস্যা নিয়ে সকলকেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে একটি সমস্যার বিষয় হলো, বেশিরভাগ মানুষ গ্য়াস-অ্যাসিডিটির সমস্যাকে তেমন একটা আমলই দেন না। বরং এই সমস্যাকে ভীষণই অবহেলার চোখেই দেখেন। তাই তো পেটপুরে খাওয়ার পর চোঁয়া ঢেকুর, বুক জ্বালার মতো সমস্যা দেখা দেওয়া মাত্রই অনেকেই পেটে একটা অ্যান্টাসিড চালান করে দেন। এতে সমস্যা তৎক্ষণাত কমে যায় সেটি ঠিক, তবে অসুখের মূলে আঘাত করা আর হয়েই ওঠে না। তাই পরবর্তীকালে একটু সুযোগ পেলে সমস্যা আবার চাগান দেয়।
সে কারণে চিকিৎসকদের একটি অংশ এই সমস্যার মূলে কুঠারাঘাত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এখন প্রশ্ন হলো কীভাবে করবেন এই কাজ? কোনো চিন্তা নেই, আমাদের এই প্রতিবেদন শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি এমন কয়েকটি টোটকা সম্পর্কে জেনে যাবেন যা গ্যাস-অ্যাসিডিটিতে ধন্বন্তরির মতোই কাজ করবে। তাই দেরি না করে আসুন সেই ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে জেনে নিই।
সমস্যা দূর হবে মৌরি খেলে
এই ধরনের সমস্যাকে পগার পাড় করতে হলে যতোশীঘ্র সম্ভব মৌরির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলতে হবে আপনাকে। প্রকৃতপক্ষে মৌরিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা পেটের সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কার্যকরী। তাই আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা গ্যাস, অ্যাসিডিটি ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যায় এক চামচ মৌরি গরম পানিতে গুলে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতেই কিছুক্ষণের মধ্যে সমস্যা প্রশমিত হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন তারা। তাই সুস্থ থাকতে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের এই পরামর্শ মেনে চলায় ভালো।
কালোজিরে
আপনার হেঁশেলে মজুত থাকা কালোজিরেতে এই সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে। আসলে কালোজিরেতে এমন কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা গ্যাস-অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই এই ধরনের সমস্যার খপ্পরে পড়া মাত্রই রান্নাঘর থেকে ১ চামচ কালোজিরে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে খান। এক গ্লাস পানিতে ১ চামচ কালোজিরে মিশিয়ে দ্রুত গলায় চালান করুন। এতেই দেখবেন কষ্ট কমে গেছে।
লবঙ্গ
লবঙ্গের মতো এমন উপকারী ভেষজ হাতের সামনে থাকতে গ্যাস-অ্যাসিডিটিকে ভয় করার কোনও অর্থই হয় না। তাই চিকিৎসকদের একাংশ গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বাতকর্ম, বমি কিংবা বমি বমিভাবের মতো সমস্যায় ভুক্তোভোগীদের প্রতিদিন লবঙ্গ খাওয়ার পরামর্শ দেন। এই কাজটা করলেই সুফল পেতে একেবারেই সময় লাগবে না। তবে শুধু পেটের সমস্যায় নয়, দাঁতের ব্যথা কমানোর কাজেও এই মশলার জুড়ি নেই।
তরমুজের জুস
বর্তমানে শুধু সিজেনেই নয় অন্য সময়ও পাওয়া যায় তরমুজ। পেটের সমস্যার মূলে কুঠারাঘাত করতে চাইলে সময় সুযোগ পেলেই তরমুজের জুস খেয়ে নিতে পারেন। আসলে তরমুজে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাকে দূর করে দিতে সক্ষম। এছাড়াও মনে রাখবেন, তরমুজের জুস দেহে পানির ঘাটতিও মিটিয়ে দেয়। ডিহাইড্রেশনের সমস্যা মিটলে পেটের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।
ঈষদুষ্ণ পানি পান
গ্যাস-অ্য়াসিডিটি কিংবা পেট ফাঁপা, বমি, ডায়ারিয়ার মতো একাধিক জটিল সমস্যার একটাই সমাধান আর তা হলো ঈষদুষ্ণ পানি পান। প্রতিদিন সকালে উঠে এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ পানি পেটে চালান করে দিতে পারলেই দেখবেন পেটের সমস্যা বাপ বাপ করে পালিয়েছে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org