দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সর্দি-কাশি, গলা খুসখুসে, ঠাণ্ডা লাগা শীতের নিত্য সঙ্গী। তবে এগুলো ছাড়াও শীতে আরও একটি সমস্যা দেখা যায়। আর সেটি হলো ত্বকে র্যাশের প্রাদুর্ভাব।
এইসব ঠাণ্ডা লাগার অন্যতম কারণই হলো নিয়মিত গোসল না করা। শীতে পানি খাওয়ার মতোই গোসল করার প্রবণতাও অনেকটা কমে যায়। যে কারণে ত্বক রুক্ষ্ম ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। সাধারণ রুক্ষ্ম ত্বকে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ত্বকের কোষে কোষে ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে থাকে। সেখান থেকেই র্যাশের সূত্রপাত। সংক্রমণ ঠেকাতে নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাটা জরুরি। এই সময় ত্বক অত্যাধিক আর্দ্র হয়ে পড়ে। যে কারণে র্যাশের সমস্যা দেখা দেয়। শীতে অ্যালার্জি, র্যাশের সমস্যা থেকে বাঁচতে ঘরোয়া প্রতিকারও রয়েছে। আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
ওটমিল
শুধু ওজন কমাতেই নয়, একজিমা কিংবা সোরেসিসের সমস্যায় ত্বকের প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে ওটমিল। হালকা গরম পানিতে দুই কাপ ওটমিল পাউডার ভিজিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। এরপর ওই পানিতে গোসল করুন। ত্বকের রুক্ষ্মতা অনেকটা কমে আসবে। র্যাশ, চুলকানির সমস্যাও তখন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
অলিভ অয়েল
ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল ভীষণ কার্যকরী। কোমলতা ফেরানোর পাশাপাশি ত্বকের আরও অনেক সমস্যা কমাতে দারুণ কাজে আসে এই অলিভ অয়েল। ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট-সমৃদ্ধ অলিভ অয়েল ত্বকের ক্ষয় রোধ করতে এবং আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
ওজন কমানো থেকে ত্বকের যত্ন- বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয় এই অ্যাপল সাইডার ভিনিগার। এই ভিনিগারে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ থাকার কারণে যে কোনও কিছু থেকে ত্বকের অ্যালার্জির সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে। শীতকালে অ্যালার্জির সমস্যা যাতে বাড়াবাড়ি আকার ধারণ না করে, সেজন্য ভরসা রাখতে পারেন এই অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের উপর। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org