দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা এতোদিন শুনে এসেছি বেশি বেশি পানি পান করা শরীরের জন্য উপকার। এমনই পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরাও। তবে এবার ২০ মিনিটে ৪ লিটার পানি পান করে প্রাণ হারালেন মার্কিন নারী!
বেশি বেশি পানি পান করা যেমন উপকারী তেমনি অতিরিক্ত পানি পান করলে বড় বিপদও ঘটতে পারে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে! শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও সম্প্রতি এমনই এক ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০ মিনিটে ৪ লিটার পানি পান করার পর মৃত্যু ঘটেছে এক নারীর।
জানা যায়, মৃত্যুবরণ করা ওই নারীর বয়স ৩৫ বছর ও নাম আশলে সামারস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। আশলে পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়ে ‘ডিহাইড্রেশন’ অনুভব করেন। সেইজন্যই ২০ মিনিটে প্রায় ৪ লিটার পানি পান করেন তিনি। তারপরই তার মৃত্যু ঘটে। অতিরিক্ত পানি পান করার কারণে শরীরে বিষক্রিয়ার জেরেই আশলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
তাহলে ঠিক কী হয়েছিল আশলের?
আশলের ভাইা ডেভব মিলার জানিয়েছেন যে, গত ৪ জুলাই স্বামী এবং দুই মেয়ের সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়েছিলেন আশলে। সারাদিন বাইরে ঘোরার পর তিনি ডিহাইড্রেশন অনুভব করেন। সেইজন্য বেশি করে পানি পান করতে শুরু করেন। তিনি ২০ মিনিটের মধ্যে ৪ লিটার পানি পান করেছিলেন।
পানি পান করার পর থেকেই অসুস্থতা বোধ করেন আশলে। তিনি মাথা ব্যথা, গা-হাতে ব্যাথা অনুভব করেন। তারপর বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই, গ্যারাজেই পড়ে যাওয়ার পর অচেতন হয়ে যান আশলে। তারপর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার তার আর জ্ঞান ফেরেনি।
পরে হাসপাতালের চিকিৎসক আশলেকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অতিরিক্ত পানি পান করায় ‘পানি বিষক্রিয়া’, যার নাম হলো ‘হাইপোনাট্রেমিয়া’। এর জেরেই আশলের মৃত্যু ঘটেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অর্থাৎ অতিরিক্ত পানি পান করার কারণে রক্তে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম কমে যায়। যে কারণে আশলের মৃত্যু হয়।
এমন একটি ঘটনায় হতবাক আশলের পরিবার। অতিরিক্ত পানি পান করলে যে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে ও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, তা কল্পনাতীত বলেই জানান মিলার।
মার্কিন চিকিৎসক ডা. ব্লেক ফ্রোবার্গ জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পানি পান করে মৃত্যুর ঘটনা অবশ্য বিরল। তবে অস্বাভাবিক কিছু নয়। কেনোনা অতিরিক্ত পানি পান করলে রক্তের বিভিন্ন তরল উপাদানসহ সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম কমে যায়। যে কারণে মৃত্যুও হতে পারে। তাই গরমের সময় ডিহাইড্রেশন হলেও পানি পান করার বিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। তথ্যসূত্র: https://india.postsen.com
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org