দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু হয় চিত্রনায়িকা মৌসুমির। সেই মানুষটিই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাঁর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মৌসুমী।
চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের মৃত্যুর খবর শুনে এমনটি বলে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় সোহানের। এর ঠিক একদিন আগেই মারা যান তাঁর স্ত্রী।
ফোনে প্রিয় পরিচালকের মৃত্যুর খবর শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৌসুমী। এদিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে ফোনের ওপাশ থেকে একটি সংবাদ মাধ্যমকে মৌসুমী বলেছেন, ‘গতকালই ভাবি চলে গেলেন। আজ শুনলাম আমাদের সোহান ভাইও নেই….।’ তারপরই আর কথায় বলতে পারছিলেন না এই অভিনেত্রী। তখন ফোনটি তুলে দেন স্বামী ওমর সানীর হাতে। তারপর ওমর সানী সোহানুর রহমান সোহানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সবাইকে দোয়া করতে বলেন।
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ বাংলাদেশের কালজয়ী সিনেমা। ১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিলো ছবিটি। সেই ছবি নির্মাণ করেছিলেন সোহান। তার হাত ধরেই অভিষেক ঘটে মৌসুমী এবং সালমান শাহ’র। এই সিনেমার নায়ক প্রয়াত হয়েছেন অনেক আগে। এবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন নির্মাতা সোহানও।
১৯৭৭ সালে পরিচালক শিবলি সাদিকের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার শুরু করেন সোহানুর রহমান সোহান। তারপর শহীদুল হক খানের ‘কলমিলতা’ (১৯৮১), এজে মিন্টুর ‘অশান্তি’ (১৯৮৬) এবং শিবলি সাদিকের ‘ভেজা চোখ’ (১৯৮৮) সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। একক এবং প্রধান পরিচালক হিসেবে তার প্রথম সিনেমা হলো ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’ (১৯৮৮)। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির টানা দুবার মহাসচিব ও দুইবার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আমার দেশ আমার প্রেম’, ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘আমার জান আমার প্রাণ’, ‘স্বামী ছিনতাই’, ‘কোটি টাকার প্রেম’, ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’, ‘দ্য স্পিড’ এবং ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ ইত্যাদি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org