দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেক সময় সিনেমাতে দেখি শহরের আকাশে ছোট একটি যান চলছে। অর্থাৎ ট্যাক্সি উড়ে চলেছে। কিন্তু বাস্তবে কী তা কখনও দেখার কথা আমরা চিন্তা করেছি? তবে এবার তাই হবে। এবার আকাশপথে চলবে উড়াল ট্যাক্সি!
এক সময়ের সেই স্বপ্নকে দ্রুত বাস্তবে পরিণত করার উদ্যোগ নিচ্ছে জার্মানের একটি কোম্পানি। দূষণ এবং প্রায় শব্দহীন এই যান প্যারিস অলিম্পিকসে সময় নজর কাড়তে পারে। এবার ট্যাক্সি চলবে আকাশে।
ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন এই যানটির নাম রাখা হয়েছে ‘ভোলোসিটি’। এটি এয়ার ট্যাক্সি নামেও পরিচিতি পেয়েছে। এটি যখন টেক অফ করে কিংবা পাশ দিয়ে উড়ে যায়, তখন প্রায় কোনো কিছুই শোনা যায় না। সেটির ৮টি ইলেকট্রিক প্রপেলার কোনো শব্দই করে না। আবার হেলিকপ্টার কিংবা বিমানের মতো কোনো ধোঁয়াও বের হয় না। জার্মানির দক্ষিণে ব্রুখসাল শহরে ভোলোকপ্টারের পরীক্ষামূলক উড়ালও দর্শকদের মনে বেশ দাগ কেটেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সদ্য উদ্বোধন করা এই হ্যাঙারের মধ্যে ভোলোকপ্টার কোম্পানির কর্ণধার ডিয়র্ক হোকে বড় আকারে ‘ভোলোসিটি’ উৎপাদনের পরিকল্পনাও করছেন। আপাতত বছরে ৫০টি ইউনিট তৈরি করাই তার লক্ষ্য। আগামী বছরের মাঝামাঝিতে প্যারিসে অলিম্পিক প্রতিযোগিতা শুরু হবার পূর্বেই তিনি সেখানে নিয়মিত এয়ার ট্যাক্সি পরিষেবা চালু করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন। পাইলটরা নিয়মিতভাবে মাসুলের বিনিময়ে যাত্রীদের নিয়ে উড়বেন।
ডিয়র্ক হোকের স্বপ্ন হলো নির্গমন ছাড়াই উড়াল সবার সামর্থ্যের মধ্যে নিয়ে আসা। তিনি মনে করেন, ‘বিমানের মূল্য অনেক বেশি থাকে। তবে বড় আকারে সিরিজ প্রোডাকশন শুরু করলে ব্যয়ের ভারসাম্য চলে আসবে। তখন অত্যন্ত ন্যায্য দামে আমরা বিমান উৎপাদন করতে পারবো। আমাদের একটি কারখানা রয়েছে, যা দিয়ে আমরা বছরে ৫০টি বিমান তৈরি করতে পারি। আর তখন টিকিটের দামও সবার নাগালের মধ্যে চলে আসবে।’
এছাড়াও, নিরাপত্তার নিরিখে ‘ভোলোসিটি’ প্রচলিত বেসামরিক বিমানের জন্য একই নিয়ম মেনেই অনুমোদন পেয়েছে। অর্থাৎ প্রতি একশো কোটি ফ্লাইট আওয়ারে বড়জোর একটি করে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org