দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা দেখে থাকি গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে ছুটে আসে মানুষ। বাংলাদেশসহ ইউরোপ ও বিশ্বের উন্নত অনেক দেশে এমন প্রবণতা দেখা যায়। তবে ঠিক এর উল্টো ঘটনা দেখা যাচ্ছে জার্মানিতে। এখানে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন মানুষরা!
দেশটির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের তথ্য উদ্বৃত করে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২০১৭ সালের পর ৩০ বছর হতে ৪৯ বছর বয়সী, যাদের সন্তান রয়েছে এবং ২৫ বছর হতে ২৯ বছর বয়সী তরুণ পেশাজীবীদের মধ্যে গ্রামে বসবাসের প্রবণতা বেড়ে গেছে। এই বিষয়ে বার্লিন ইন্সটিটিউট ফর পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষকরা বলেছেন, অতীতের চেয়ে বর্তমানে গ্রামের প্রতি মানুষের আকর্ষণ দিনকে দিন বাড়ছে।
সংস্থাটির সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক জিক্সটাস বলেছেন, ২০২১ সালে দুই-তৃতীয়াংশ গ্রামীণ সমাজে জনসংখ্যা বেড়ে গেছে। এই তথ্য এক দশক পূর্বে প্রতি ৪টি গ্রামীণ সমাজের মধ্যে মাত্র একটির জন্য তা সত্য ছিল। পরিস্থিতি বুঝতে ভ্যুস্টেনরোট ফাউন্ডেশন এবং বার্লিনের ওই ইন্সটিটিউটটির গবেষকরা জনসংখ্যা বাড়ছে এমন ৬টি গ্রামীণ সমাজ পরিদর্শন করেন। সেখানে তারা বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথাও বলেছেন।
সেখানকার একজন নতুন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি অনেক ভেবেই গ্রামে এসেছি। কারণ হলো এখানে মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধন অনেকটা শক্তিশালী। সত্যি বলতে কি, কিছু নির্মাণ করতে গেলে খরচ একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অবশ্যই গ্রামে বিষয়টা অনেকটা অন্যরকম।’ এতো কম খরচে বসবাস, প্রকৃতির সান্নিধ্য ও দূষণমুক্ত পরিবেশ, এইসব কারণে মানুষ গ্রামে যাচ্ছেন বলে গবেষকরা বুঝতে পেরেছেন।
এই বিষয়ে সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক জিক্সটাস বলেছেন যে, করোনার পর ঘরে থেকে চাকরি করা সম্ভব হওয়ার কারণে অনেকেই গ্রামে চলে যাচ্ছেন। জার্মানিতে গ্রামে যাওয়ার প্রবণতা বাড়লেও ইউরোপের অন্যান্য দেশে পরিস্থিতি এর ঠিক উলটো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের হিসাব বলেছে যে, ২০১৫ সাল হতে ২০২০ সালের মধ্যে ইইউর ৪০৬টি গ্রামীণ এলাকার মধ্যে ৩৫৫টি থেকেই মানুষ শহরে পাড়ি জমিয়েছেন। এইসব এলাকায় তরুণ এবং কাজের বয়স রয়েছে, এমন মানুষের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। সেই তুলনায় ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা বছরে গড়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ করে বেড়ে গেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org