দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দাঁতের যেসব সমস্যা রয়েছে তার অধিকাংশই স্থায়ী। তাই একবার সমস্যা দেখা দিলে তা থেকে দাঁত বাঁচানো বেশ কঠিন। বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলে দাঁতের সমস্যা অবহেলা করা মোটেও চলবে না। ব্যবস্থা নিতে হবে জরুরিভাবে।
দাঁত নিয়ে ভোগেননি এমন মানুষ খুব কমই রয়েছেন। তবে অনেকের ছোটবেলায় দাঁতের কোনো সমস্যা থাকে না। তার মানে এই ন, পরিণত বয়সে কোনো সমস্যা হবে না। দাঁতের অধিকাংশ সমস্যাই স্থায়ী হয়ে থাকে। এক বার সমস্যা দেখা দিলে তা থেকে দাঁত বাঁচানো বেশ কঠিন। তাই বয়স ৩০ পেরোলে দাঁতের সমস্যা কোনওভাবেই অবহেলা করা চলবে না। জরুরিভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।
দাঁতের পোকা
চিকিৎসকরা বলেন, দাঁতে পোকা বলে কোনো কিছু হয় না। দাঁতের ক্যাভিটির দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা না হলে দাঁতের ব্যথা শুরু হয়ে যায়। চলতি কথায় এটিকেই দাঁতের পোকা বলা হয়। ক্যাভিটি হলো দাঁতের ছিদ্র। দাঁত ঠিক মতো পরিষ্কার না করলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও সমস্যা বাড়ে। দাঁতের গোড়া পর্যন্ত চলে গেলেও ব্যথা হয়। ক্যাভিটির মধ্যে খাবারের কুচি ঢুকে যায় অনেক সময়। সেই খাবার পচে গিয়ে দাঁতের ক্ষতিও হয়ে থাকে। তাই প্রতিদিন দিনে দু’বার অবশ্যই দাঁত মাজতে হবে।
দাঁতের ফিলিং
দাঁতের মধ্যে তৈরি হওয়া ছিদ্রটি ছোট হলে ফিলিংয়ের মাধ্যমে খুব সহজেই বন্ধ করা যেতে পারে এই ধরনের সমস্যা। ফিলিং খাবার ঢোকা আটকাতে সাহায্য করে। ফিলিংয়ের মাধ্যমে ক্যাভিটিকে বাড়তে না দিয়ে সেই জায়গাটিকেও ভরাট করে দেওয়া হয়।
দাঁত তুলে সে জায়গায় নতুন দাঁত বসানো যাবে?
দাঁত তুলে সেই স্থানে মূলত তিনভাবে নকল দাঁত বসানো যাবে। প্রথমত: অস্থায়ী নকল দাঁত লাগানো যেতেই পারে। এই দাঁত ইচ্ছে মতোই খুলে ফেলা যাবে। তবে তিরিশের এই ধরনের দাঁত লাগানো একটু ঝক্কি। চাইলে স্থায়ী নকল দাঁতও লাগানো যাবে, যা এক বার লাগিয়ে দিলে খোলার দরকার হয় না। এ ছাড়াও ডেন্টাল ইমপ্লান্টের মাধ্যমে নতুন তৈরি করা দাঁত বসানো যাবে। তবে কোনটি আপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত, তা বলতে পারবেন দন্ত্য চিকিৎসক।
রক্তপাত
অনেক সময় দাঁতের মাড়ি ফুলে গিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়ে যায়। যে কোনও অঙ্গ থেকেই রক্ত পড়া কোনো মতেই ভালো লক্ষণ নয়। তাই এই ক্ষেত্রে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কীভাবে দাঁত মাজবেন?
সকালে উঠেই দাঁত মাজার থেকেও অনেক বেশি জরুরি রাতে খাওয়ার পর দাঁত মাজা। রাতে খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে অবশ্যই দাঁত মজতে হবে। তবে অবশ্যই নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। তিন মাস পর পর আপনার ব্রাশ পরিবর্তন করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org