দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে পরিবারের প্রায় সকলেরই। তাই বার বার চা না বানিয়ে একবার বানিয়ে সেটি বার বার গরম করে খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। তাতে সময় কিছুটা বাঁচে। তবে সেটি শরীরের ক্ষতি হয় কি না তা আমাদের জানা নেই। আজ জেনে নিন বিষয়টি।
ঠাণ্ডা চা খেতে মোটেও ভালো লাগে না। তাই একবার চা খাওয়ার কিছুক্ষণ পর আরও এক বার গরম করে দেওয়ার অনুরোধ করতে হয় অনেক সময়। রাস্তার ধারে চায়ের দোকানেও অনেক সময় একাধিক বার ফুটিয়ে রাখা চা পরিবেশন করা হয়ে থাকে। এতে চায়ের তরতাজা গন্ধ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি স্বাদ ও পুষ্টিগুণও নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, একাধিক বার ফোটানো চা খেলে শরীরের পক্ষেও ক্ষতিকর হতে পারে।
তৈরি করা চা পুনরায় গরম করা কী আদতেও নিরাপদ?
# বেশি সময় ধরে চা গরম করা হলে চায়ে থাকা ক্যাফিন এবং ট্যানিন দু’টিই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চায়ের স্বাদ তেঁতো হয়ে যায় ও শরীরের পক্ষেও ভালো নয়। বার বার গরম করা চা পান করলে খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে।
# চায়ের পাতায় এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া এবং ছত্রাক থাকে, যা গরম করলে তা সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত ব্যাক্টেরিয়াযুক্ত চা খেলে চোখের গ্লুকোমা এমন কি স্নায়ুতেও প্রভাব ফেলে। এতে স্মৃতিশক্তি, দৃষ্টিশক্তি কমেও যেতে পারে।
# সাধারণ চায়ের মধ্যে থাকে উপকারী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ক্যাথেচিন। আর দুধে থাকে কেসিন জাতীয় প্রোটিন। দুধ মিশিয়ে চা বার বার গরম করলে ক্যাথেচিন এবং কেসিন মিশে গিয়ে চায়ের উপকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে। হজমশক্তির উপরেও প্রভাব ফেলে। ডায়রিয়া, পেটের সমস্যাও দেখা দিতে পারে এই বার বার গরম করে খাওয়া চা খেলে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org