দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টানা তিন মেয়াদে একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বদলে দিয়েছেন বাংলাদেশের চিত্র। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু করেছেন। গত বছরের ২৫ জুলাই উদ্ধোধনের ৯ মাস পর পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগ শুরু হয়েছে আজ।
মাওয়াতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর এই ট্রেনটি মাওয়া থেকে যাত্রা করে ঠিক দুপুর একটার দিকে। সেতুতে আসতে সময় লাগে মাত্র ৬ মিনিট। সেতু পেরিয়ে যেতে সময় লাগে ১১ মিনিট। স্বপ্নের মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে জাতির ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে যেনো কেও না পারে সেজন্য জনগণের প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন।
পদ্মা সেতুর মাওয়া স্টেশন প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে আয়োজন করা হয়। বেলা ১১টায় অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে অনুষ্ঠানেস্থলে উপস্থিত হন ঠিক ঘড়ির কাঁটা তখন ১১টা। সবাই এই সময় স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন।
বেলা ১২টার পর বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, জাতীয় চার নেতা, লাখো মুক্তিযোদ্ধা , সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে যখনই মাথা উঁচু করে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন বঙ্গবন্ধু, তখনই তাকে নির্মম এক হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়। বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা তো কোনো উন্নয়নই করেনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশ। সড়ক, রেল সবকিছুতে উন্নয়ন করেছে সরকার। ডুয়েল গেজ-ব্রড গেজ বাড়ানো হয়েছে। তিন চার বছরের মধ্যে রেল যোগাযোগ আরও বাড়বে। মানুষের জীবনযাত্রা আরও উন্নয়ন ঘটবে। ট্রান্স এশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা আমাদের উদ্দেশ্য। স্মার্ট বাংলাদেশের সবকিছুই হবে স্মার্ট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ ঠিক রাখা আমাদের লক্ষ্য। আমরা পরিবেশবান্ধব নেটওয়ার্ক করছি। দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। এক ইঞ্চি জমিও যেনো ফাঁকা না থাকে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। বলেন, দেশ এগিয়ে নেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, এখন দক্ষ জনশক্তি করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো।
পদ্মা সেতুর নানামুখী ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বাঙালিকে কেও দাবায়ে রাখতে পারবা না। কেও পারেনি। আমরা নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করেছি। জাতির কাছে অনুরোধ, জাতির ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে আপনারা খেয়াল রাখুন। সুইচ অন করে রেলগাড়ি অন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে টিকেট কেটে ট্রেনে চড়ে বসেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর সঙ্গীদের মধ্যে মন্ত্রী, সচিব সহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও বিশেষ করে ১১ জন সাধারণ মানুষকে সফর সঙ্গী করা হয়। যার মধ্যে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ কৃষক ও স্কুল কলেজের ছাত্ররাও। প্রধানমন্ত্রী মাওয়া থেকে ট্রেনে করে ভাঙ্গায় যাওয়ার পর সেখানে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।
ছবি: সময় টিভির সৌজন্যপ্রাপ্ত
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org