দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ থাইরয়েড রোগটি অনেকটা নিঃশব্দ ঘাতকের মতোই। এই গ্রন্থির অতিসক্রিয়তা বা গ্রন্থি থেকে একেবারেই হরমোন ক্ষরণ না হওয়ার বিষয়- দু’টিই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর একটি বিষয়। তবে কয়েকটি খাবার নিয়ম করে খেলে থাইরয়েড হরমোন ক্ষরণের মাত্রা থাকবে স্বাভাবিক।
আমরা ঘুম প্রিয়। ঘুমের দুর্বলতা রয়েছে আমাদের মধ্যে অনেকের। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, সব সময়ই ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয়। তবে ইদানীং ঘুম থেকে উঠতে যেনো একটু বেশিই কষ্ট লাগছে। অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্তি ঘিরে ধরছে আপনার মধ্যে। সাধারণভাবে এই লক্ষণগুলো দেখলে চিকিৎসকরা রক্তে থাইরয়েডের মাত্রা পরীক্ষা করাতে বলে থাকেন। বয়সের সঙ্গে থাইরয়েডের কোনও সম্পর্ক নেই, তা হয়তো জানেন। গোটা পৃথিবীর ১৫ শতাংশ মানুষ এই সমস্যাতে ভুগছেন। তাই যে কোনও বয়সেই হানা দিতে পারে থাইরয়েড। তবে থাইরয়েড তো অনেকটা নিঃশব্দ ঘাতকের মতোই। এই গ্রন্থির অতিসক্রিয়তা বা গ্রন্থি থেকে একেবারেই হরমোন ক্ষরণ না হওয়া- দুটিই শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। জীবনযাপনে পরিবর্তন আনার সঙ্গে সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে সচেতন হওয়াটাও জরুরি। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, ওষুধের পাশাপাশি কয়েকটি পানীয় এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্যও করতে পারে।
শসার রস
রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা- সবই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই শসা। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, নিয়মিত শসা খেলে তা থাইরয়েডের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
দুধ ও হলুদ
দুধে এক চিমটে হলুদগুঁড়ো দিয়ে খাওয়ার রেওয়াজ বিদ্যমান রয়েছে বহু দেশে। ঠাণ্ডা লাগলে এই পানীয় দারুণ কাজ করে থাকে। আয়ুর্বেদ মতে, হলুদে থাকা কারকিউমিন ও দুধের প্রোটিন একত্রিত হয়ে স্বাভাবিকভাবে থাইরয়েড ক্ষরণে সাহায্য করে থাকে।
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
এই অ্যাপল সাইডার ভিনেগার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। একইভাবে রক্তে থাইরয়েডের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই উপাদানটি। এক গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাসে ধীরে ধীরে থাইরয়েড হরমোন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
উষ্ণ পানিতে লেবুর রস
বিপাকহার বাড়িয়ে তুলতে ও মেদ ঝরাতে চাইলে নিয়মিত উষ্ণ পানির লেবুর রস ও মধু দিয়ে খেয়ে থাকেন অনেকেই। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করা ও শরীরকে আর্দ্র রাখা এই দুই-ই থাইরয়েডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।
সেলেরি পাতার রস
সেলেরি পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, কে, সি এবং ফোলেট, পটাশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর এই সেলেরি প্রদাহ ও রক্তে থাইরয়েডের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org