দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আবহাওয়ার রকমফের হলেই ঠাণ্ডা-গরমে সর্দি, কাশি হয় অনেকের। তবে তা ঠাণ্ডা লেগে হলো নাকি বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জিজনিত কারণেই হলো, তা বুঝতে পারেন না অনেকেই।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই অগুন্তি হাঁচি শুরু হয়ে যায়। আবার কারও সারা বছর ধরে হতে থাকে খুসখুসে কাশি। হাসলে কিংবা কোনও কারণে গলায় চাপ পড়লেই কাশতে থাকেন। আবহাওয়ার একটু হেরফের হলে ঠাণ্ডা-গরমে সর্দি, কাশি হয় অনেকের। তবে সেটি ঠাণ্ডা লেগেই হলো নাকি বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জিজনিত কারণে হলো, সেটি বুঝতেও পারছেন না। এই ধরনের ঠাণ্ডা লাগা নিয়ে বাইরে বের যাওয়াও যথেষ্ট ঝুঁকির। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বেশি। ঠাণ্ডা লাগার মতো বিষয় নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতেও চান না অনেকেই। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণ জেনে রাখলে বুঝতে খুবই সহজ হবে।
চিকিৎসকরা বলেন, অ্যালার্জিজনিত কারণেও নাক থেকে পানি পড়ে। চোখ, নাক, মুখ ও গলায় সুড়সুড় করতে থাকে। আবার কারও কারও গলা চুলকোয়। অ্যালার্জি হলে সাধারণত সর্দির ধরন স্বচ্ছ, পাতলা হয়ে থাকে। তবে ব্যাক্টেরিয়াজনিত সংক্রমণ হলে শুধু ঠাণ্ডা লাগাই নয়, সঙ্গে জ্বরও হতে পারে।
তাহলে নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?
# অ্যালার্জিজনিত সমস্যার অন্যতম কারণই হলো বায়ুদূষণ। তাই ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত রাখে এমন গাছও রাখতে পারেন। আবার এয়ার পিউরিফায়ার ঘরে রাখতে পারেন। যা বদ্ধ জায়গার বাতাস দূষণমুক্ত রাখতেও সাহায্য করবে।
# বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা কমতে শুরু করার কারণেও অনেক সময় বাইরে ধুলোর পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। তাই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মুখে মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন।
# বাড়ি ফিরেই হাত-পা ভালো করে ধোয়া ও জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি নাসারন্ধ্রও জীবাণুমুক্ত করাটা জরুরি। তাই ধৌতি পদ্ধতিতে নাক জীবাণুমুক্ত রাখার অভ্যাস করতে হবে। এর পরও যদি এই অবস্থা চলতে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org