দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জিরাফের মতো লম্বা গলা নারীদের। দেখতে সত্যিই অদ্ভুত! মনে হয় যেনো মাথাটা শূন্যে ভেসে রয়েছে! লম্বা গলা নারীদের এমন এক আজব গ্রাম ‘লং নেক উইমেন ভিলেজ’!
ছোট থেকেই এরা গলায় পিতলের রিং ব্যবহার করার মাধ্যমে গলা লম্বা করে থাকে। সে কারণে তাদের জিরাফ ওম্যান বলেও ডাকা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা জিরাফ নারীদের দেখতে ভিড় জমান থাইল্যান্ডের এই গ্রামটিতে।
সাধারণত সুস্থ-স্বাভাবিক কোনো নারীদের গলা এতোটা উঁচু হয় না। তাই ওই গ্রামকে বলা হয় ‘লং নেক উইমেন ভিলেজ’ অর্থাৎ লম্বা গলার নারীর গ্রাম।
এমন গল্প শুনে মনে হতে পারে কোনো সিনেমা কিংবা গল্পের কথা আলোচনা করা হচ্ছে, বলা হচ্ছে কাল্পনিক কোন এক জায়গার কথা। তবে না! বাস্তবেই এমন গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে থাইল্যান্ডে।
মিয়ানমার সীমান্ত এবং উত্তর থাইল্যান্ডের পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করেন কায়ান লাহ্বি নামক কায়ান সম্প্রদায়ের এক উপজাতিরা। কায়ান নারীরা বংশ পরম্পরায় অনেক সুন্দরী হয়ে থাকেন। তাদের সৌন্দর্য নাকি আরও বাড়িয়ে তোলে তাদের এই জিরাফ গলা।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো জন্মগতভাবে এই নারীদের গলা লম্বা হয় না। জন্মের সময় অন্য পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই থাকে তাদের গলা। বংশ পরম্পরায় নিজ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষা করতে গলায় রিং পরান তারা।
এই গ্রামে মেয়েদের ৫ বছর বয়স থেকেই গলায় সোনালি রঙের পেঁচানো রিং পরিয়ে দেওয়া হয়। আর প্রতিবছরই রিঙের প্যাঁচ বাড়তে থাকে। আর এভাবেই একটার পর একটা রিং যোগ করা হয় ২১ বছর বয়স পর্যন্ত। এই ২১ বছরে একবারের জন্যও কায়ান নারীরা ওই রিং গলা হতে খোলেন না।
এরপর ২১ বছর পর যখন এই রিং তাদের গলা থেকে খোলা হয়, আর তখন গলায় রিংয়ের কালো দাগ বসে যায়। গলাটা অদ্ভুত রকমের সরু এবং লম্বা দেখায়। অনেকের মতে, বাঘের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতেই নাকি তারা গলায় ভারি এই সুরক্ষাবেষ্টনী পরে থাকেন।
এই নিখুঁত সৌন্দর্য নিয়ে গর্ববোধ করেন কায়ান নারীরা। প্রতিবছর বহু পর্যটক এই গ্রামটিতে ভিড় জমান জিরাফ নারীদের দেখতে। আর এই পর্যটন শিল্পকে কাজে লাগিয়ে আয় করছে স্থানীয় সরকার। পর্যটকদের কাছে নিজেদের তৈরি বিভিন্ন কারুপণ্য দর্শনার্থীদের কাছে বিক্রয় করেন কায়ান নারীরা। পর্যটকরা এইসব নারীদের দেখে মুগ্ধ হন ও বিস্মিত হন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org