দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে হলে যতোটা শরীরচর্চার প্রয়োজন, ততোটাই দরকার খাওয়া-দাওয়াও বুঝে-শুনেই করতে হবে। সেটি না করতে পারলে কোনওভাবেই হৃদযন্ত্র ভােলো রাখা যাবে না।
হৃদযন্ত্রের খেয়াল রাখা খুব সহজ নয়। নিয়ম মেনে না চললে হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বাড়তে থাকে। তবে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে তখন, যখন ডায়েটেও ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। হার্টের অসুখ ঠেকাতে হলে জীবনযাপনে বেশ কিছু পরিবর্তনও আনতে হয়, একইসঙ্গে খাওয়া-দাওয়াতেও পরিবর্তন আনা দরকার। শুধুমাত্র তেল, ঘি, মশলা, মাখন খাওয়া বাদ দিলে চলবে না। হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়বে কোন খাবারগুলো খেলে, সেগুলোও জেনে রাখাটা জরুরি। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে যতোটা শরীরচর্চার প্রয়োজন, ততোটাই দরকার খাওয়া-দাওয়াও বুঝে-শুনে করা। সেটা না করতে পারলে কোনওভাবেই হৃদযন্ত্র ভালো রাখা যাবে না।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটের ফ্ল্যাভনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হার্টের খেয়াল রাখে এটি ঠিক, তবে ডার্ক চকোলেটে কিছুটা চিনি থাকে। অতিরিক্ত ক্যালোরি বহন করে। তাই প্রতিদিন ডার্ক চকোলেট খাওয়ার অভ্যাস কখনও করবেন না। মাঝে-মধ্যে এক বা দুটো টুকরো খেতেই পারেন।
বেরি ফ্রুটস
বেরি-জাতীয় ফলে পাওয়া যায় প্রচুর অ্যান্থোসায়ানিন, এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এই ফলগুলো রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। রক্ত পরিশোধনেও এদের ভূমিকা অনেকটা রয়েছে। তাই হার্টের খেয়াল রাখতে এই ধরনের ফল খুবই উপকারী। স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, আমলকি, আঙুর নিয়ম করে খেলে উপকার পাবেন।
টমেটো
বর্তমানে দাম বেশি হলেও টমেটোর উপকারিতা রয়েছে। এতে থাকা লাইকোপিন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবে। তাই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা না থাকলে পাতে রাখতেই পারেন টমেটো।
শাক
সবুজ শাকসব্জিই হলো পর্যাপ্ত ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের সমৃদ্ধ উৎস। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে ধমনীর কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে নাইট্রেট সমৃদ্ধ এইসব শাক। তবে রাতে মানুষের বিপাকহার কম থাকে, তাই রাতেশাক খাওয়া এড়িয়ে চলায় ভালো। এতে করে বদহজমের আশঙ্কাও থেকে যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org