দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তির অনুমোদন দিয়েছে মিসরের মন্ত্রিসভা। ইয়াহিয়া আব্দুল নাসের মোহাম্মদ দামিয়েত্তার নামে ওই ছাত্রকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর বাদদিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখার ছাড়পত্র দেওয়া হয়! গালফ নিউজের খবরে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গালফ নিউজে বলা হয়েছে, ইয়াহিয়ার অসাধারণ বৈজ্ঞানিক দক্ষতার কারণে তাকে এই ব্যতিক্রমী সুযোগ দেওয়া হয়েছে। মিসরের শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা মন্ত্রণালয় তার ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করবে বলে জানানো হয়।
ছেলের ব্যতিক্রমী এই ক্ষমতা তুলে ধরে ইয়াহিয়ার মায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়নের পর মন্ত্রণালয় হতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দেশটির শিক্ষা দপ্তর জানিয়েছে যে, এই পদক্ষেপটি অসাধারণ দক্ষতা ও প্রতিভাবানদের অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্যেও নেওয়া হয়।
উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইয়াহিয়ার মানসিক দক্ষতার পরীক্ষাও নেয়, যেখানে সে প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদর্শন করে সাবলিলভাবে। তার আরও দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মূল কেন্দ্র জেওয়াইল সিটিতে ভর্তির জন্য মেধাবী আবেদনকারীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতেও অংশ নিতে হয়েছিল। ৪ ঘণ্টাব্যাপী ওই পরীক্ষায় তাদেরকে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও সমালোচনামূলক চিন্তার মতো বৈজ্ঞানিক বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয় বলে জানিয়েছে গালফ নিউজ।
ইয়াহিয়া সেই পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল অর্জনের মধ্যদিয়ে শীর্ষ দশে স্থান করে নেন। তার বৈজ্ঞানিক কৃতিত্বের পাশাপাশি, দুই ঘণ্টার ইংরেজি ভাষার পরীক্ষাতেও সে দক্ষতা দেখিয়েছে। মন্ত্রিসভা ইয়াহিয়ার পরিবারকে একটি ফুল ফান্ডেড বৃত্তিও প্রদান করেছে। যে কারণে সে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের জেওয়াইল সিটিতে একটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে।
মিসরীয় সরকার দ্বারা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের জন্য জেওয়াইল সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, প্রয়াত মিসরীয় বিজ্ঞানী আহমেদ জেওয়াইলের সম্মানে এর নামকরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর, বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশেষ আইন মঞ্জুর করেছে। যার লক্ষ্যই হলো মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় যুক্ত করা এবং তাদের উদ্ভাবনী দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য সুযোগ প্রদান করা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org