দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মেয়ের বিয়ের জন্য ওষুধ খেয়ে ওজন কমাতে গিয়েছিলেন জনৈকা অস্ট্রেলিয়ান নারী। তবে এই ওষুধ খাওয়াই যেনো তারজন্য কাল হলো। ওজন কমানোর ওষুধ খেয়ে পরিপাকতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ওই নারী!
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৬ বছয় বয়সী ট্রিশ ওয়েবস্টার ওজন কমানোর জন্য ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্কের ওষুধ ওজেম্পিক সেবন করছিলেন। এই ওষুধটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং ওজন কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ওজেম্পিক সারা বিশ্বে একটি জনপ্রিয় ওজন কমানোর ওষুধ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওষুধটি জিএলপি-১ নামে একটি প্রাকৃতিক হরমোনকে অনুকরণ করেই মূলত কাজ করে, যা পাকস্থলী ও অন্ত্রের মধ্যদিয়ে খাবারের পথচলাকে এটি ধীর করে দেয়। এতে করে বেশি সময় পেট ভরা থাকে।
তবে এই ওষুধটি যদি খুব বেশি পাকস্থলীকে ধীর করে দেয় কিংবা অন্ত্রগুলোকে ব্লক তাহলে এটি সমস্যার কারণও হতে পারে। হয়তো ওই নারীর ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
ভুক্তভোগীর স্বামী রয় ওয়েবস্টার জানিয়েছেন, তার স্ত্রী চিকিৎসকের পরামর্শে ওজেম্পিকের সনেগ সাক্সেন্দা নামে একটি ইনজেকশনও নিতেন। এভাবে তিনি ৫ মাসে ১৫ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেন। তবে ওজন কমলেও দ্রুতই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই নারী ট্রিশ।
এই বছরের ১৬ জানুয়ারি রয় দেখতে পান যে, তার স্ত্রীর মুখদিয়ে বাদামি রঙয়ের এক ধরনের তরল বের হচ্ছে। ওই রাতেই মারা যান ট্রিশ। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ওষুধের কারণে ট্রিশের মৃত্যু ঘটেনি। তবে চিকিৎসকদের দাবি মানতে একেবারেই নারাজ রয়।
এদিকে এক বিবৃতিতে ওজেম্পিকের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্ক জানিয়েছে যে, ওষুধটি বাজারে জনপ্রিয়তা হওয়ার পরই তারা এই সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org