দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একজন মানুষের বয়স ৫০ পেরিয়ে যাওয়ার পর যারা ৫ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোন, তাদের দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বেশি থাকে, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় সেটি উঠে এসেছে।
মানুষের বয়স ৫০ পেরিয়ে যাওয়ার পর অনেকটা বেড়ে যায় ঘুমের গুরুত্ব। যাদের বয়স ৫০ পেরিয়ে যাওয়ার পর যারা ৫ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোন, তাদের দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটা বেশি থাকে, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় সেটি উঠে এসেছে।
ব্রিটেনের প্রায় ৮ হাজার সরকারি আধিকারিকের উপর এই সমীক্ষাটি চালানো হয়। ৫০ বছর বয়সের পূর্বে এই আধিকারিকদের কারও কোনও রকমের দীর্ঘস্থায়ী রোগই ছিল না। ৫০-এর পর ২৫ বছর ধরে প্রতি ৪ হতে ৫ বছর অন্তর তাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করেন গবেষকরা। ওই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানপত্রিকা পিএলওএস মেডিসিনে।
গবেষণার ফল বলছে, যারা প্রতি রাতে ৫ ঘণ্টার কম ঘুমোন, তাদের বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি, আর যারা দৈনিক অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমোন তাদের তুলনায় ৬০ বছর বয়সে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে হয় ৩২ শতাংশ। ৭০ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি ৪০ শতাংশেরও বেশি।
এই ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী রোগ বলতে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা, লিভারের সমস্যা, স্মৃতিভ্রংশ, বাত, পারকিনসন্স ও মানসিক অবসাদকে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা। গবেষকরা দাবি করেছেন, পর্যাপ্ত ঘুম হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, বিপাক হার ঠিক রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও সহায়তা করে। তাই শরীর সার্বিকভাবে সুস্থ থাকে। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণার অবকাশ রয়েছে বলে মত দিয়েছেন গবেষকরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org