দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৮ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের সুস্থ থাকতে সয়াবিনের উপর ভরসা রাখা যায় চোখ বন্ধ করে। তবে কোলেস্টেরলের রোগীরা কী সয়াবিন খেতে পারেন?
শরীরেরও খেয়াল রাখবে আবার স্বাদেরও যত্ন নেবে- এমন খাবারের তালিকা খুব বেশি দীর্ঘ কিন্তু নয়। তবে দু’টি গুণই রয়েছে, এমন খাবারের অন্যতম বিকল্পই হলো সয়াবিন। ভরপুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সয়াবিন সকলের জন্যে সমানভাবে উপকারী। পুষ্টিবিদদের মতে, সপ্তাহে অন্তত ৩০ হতে ৫০ গ্রাম সয়াবিন খেলে অনেক শারীরিক সমস্যা থেকেও দূরে থাকা যাবে। সুস্থ থাকতে কেনো খাবেন এই সয়াবিন?
# এই সয়াবিনে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। এই উপাদান হাড়ের যত্ন নেবে। বয়সের চাকা সামনের দিকে যতোই গড়াতে থাকে, হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও ততোই বাড়তে থাকে। এছাড়াও ইদানীং অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে অল্প বয়সে হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। হা়ড় শক্তিশালী ও মজবুত রাখতে ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খাওয়ার কথা বলে থাকেন চিকিৎসকরা। মহিলাদের রজোনিবৃত্তির পর শরীরে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ তখন কমতে থাকে। যে কারণে হাড় তখন ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।
# রোজকার ডায়েটে ফাইটোইস্ট্রোজেন সমৃদ্ধ সয়াপ্রোটিন থাকলে ক্যালশিয়ামের ঘাটতিও কমে যায়। রজোনিবৃত্তির পর মহিলাদের নিয়ম করে ৩০ গ্রাম সয়াবিন খাওয়াতে পারলে হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি অনেকটাই কমবে। অস্টিয়োপোরেসিসের মতোই হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যাকেও প্রতিহত করতে সয়াবিন বেশ কার্যকর।
# সয়াবিনে আরও রয়েছে আইসোফ্ল্যাভেন এবং লেসিথিন। এই দু’টিই জোরালো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এগুলো কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। এলডিএল অর্থাৎ, ক্ষতিকর কোলেস্টেরল শরীর থেকে দূর করতে সয়াবিনের জুড়ি নেই।
# আর সয়াবিনের আইসোফ্ল্যাভেন অত্যন্ত জোরালো ফাইটো ইস্ট্রোজেন। ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল ও ঝকঝকে রাখতে এই যৌগ সাহায্য করে থাকে। সপ্তাহে দিন তিনেক ৫০ মিলিগ্রাম করে সয়াবিন খেলে এইচডিএল ও এলডিএলের ভারসাম্যও রক্ষা পায়। যে কারণে হৃদরোগের আশঙ্কাও তখন কমে আসে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org