দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে দক্ষিণ ভারতের একটি বড় অংশে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম। তারপর শক্তি কমিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে এটি ভারতের মধ্য উপকূলবর্তী অন্ধ্রপ্রদেশে (গতকাল বুধবার) অবস্থান করে।
ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল দিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে স্থলে উঠে আসা এই ঘূর্ণিঝড়টি গত পরশু মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে অন্ধ্র প্রদেশের সৈকত শহর বাপালার নিকটবর্তী উপকূল দিয়ে একেবারে স্থলভাগে উঠে আসে। তারপর মিগযাউম রাজ্যটিতে ব্যাপক বৃষ্টি ঝড়িয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে বলে জানায় ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। -খবর রয়টার্সের।
এই ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাডুর প্রধান শহর চেন্নাইয়েও প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। এতে নগরীটিতে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার পর বন্যার রূপ নেয়। স্থবির হয়ে পড়ে নগরীর জনজীবন। এ পর্যন্ত চেন্নাইয়ে বৃষ্টিজনিত বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এতে নগরীটি মিগযাউমে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটিতে পরিণত হয়।
তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এমএক স্ট্যালিন সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, চেন্নাইতে ‘৪৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত’ হয়েছে, বৃষ্টির পানি দ্রুত অপসারণের জন্য ৪ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগে বানানো ড্রেনেজ প্রকল্প ক্ষয়ক্ষতি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বৃহত্তর চেন্নাই কর্পোরেশনের কমিশনার ডিআর জে রাধাকৃষ্ণান জানিয়েছেন যে, বন্যাকবলিত বেশ কয়েকটি নিচু এলাকা থেকে পাম্পযোগে পানি বের করে দেওয়া হচ্ছে, খাবার এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এই এলাকাগুলোতে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর অতিরিক্ত টিম এবং ৩০০ নৌকা মোতায়েন করা হয়।
চেন্নাইয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গতকালও (বুধবার) বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। নগরীর ৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ আবার চালু করা হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org