দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই বলেন, হার্ট, হাড়, ফুসফুস, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা, অনিদ্রার সমস্যায় আরাম দেয় এই উষ্ণ পানির গোসল। তারপরও ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করার উপকারিতা অস্বীকার করা যায় না।
ইতিমধ্যেই জাঁকিয়ে ঠাণ্ডা পড়া শুরু হয়েছে। তা সত্ত্বেও গায় ঠাণ্ডা পানি দিতেই ছ্যাঁক করে উঠছে। অনেকেই আবার কালের তোয়াক্কা না করেও সারা বছরই ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করেন। অনেকেই বলেন, হার্ট, হাড়, ফুসফুস, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা, অনিদ্রার সমস্যাতেও আরাম দেয় এই উষ্ণ পানি। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে সারা দিনের ক্লান্তি দূর করতে অনেকেই গরম পানিতে গোসল করেন। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, শরীর ভালো রাখতে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করারও উপকারিতা রয়েছে। ইদানীং বরফ-পানিতে গোসল করার একটা প্রবণতা হয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। বয়স্কদের জন্য এই পন্থা মোটেও ঠিক নয়। তবে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা কলের পানিতে গোসল করা যেতেই পারে।
ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরে কী কী উপকার হবে?
রোগ প্রতিরোধ
ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে শরীর থেকে এক প্রকার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান নির্গত হয়। যে কারণে ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি-কাশির মতো সাধারণ সংক্রামক ব্যধিগুলো ঠেকিয়ে রাখা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা নিয়মিত ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করেন, তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ ভালো থাকে।
অবসাদ কাটাতে
ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে যে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, তার বৈজ্ঞানিক কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। তবে অনেকেই বলেছেন যে, ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করে অবসাদজনিত সমস্যায় আরাম পাওয়া গেছে। এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন স্তরে এখনও পরীক্ষামূলক গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।
রক্ত সঞ্চালন
শরীরে কোথাও আঘাত লাগলে বা রক্ত জমাট বেঁধে গেলে ঠাণ্ডা পানি ও বরফ দিতে বলা হয়। যাতে তাড়াতাড়ি রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়েও যেতে পারে। শরীরে প্রদাহ কমাতে, কার্ডিয়োভাসকুলার নানা প্রকার রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে।
বিপাকহার উন্নত করে
যারা নিয়মিতভাবে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করেন, তাদের বিপাকহারের মান অন্যদের তুলনায় অনেক ভালো থাকে। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করার পর দেহের তাপমাত্রাও কমে যায়। তা আবারও আগের জায়গায় আনতে শরীরে জমা ফ্যাট পোড়াতে হয়। যা বিপাকহারের গতি বাড়িয়ে তোলে।
পেশির ব্যথায়
শরীরচর্চা করার পর পেশিতে ব্যথা হলে উষ্ণ পানিতে গোসল করতে বলেন প্রশিক্ষকরা। তবে পেশিতে যদি ক্ষত হয় কিংবা আঘাত লাগে, সেই ক্ষেত্রেও আরাম দেয় ঠাণ্ডা পানি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org