দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতের এই সময়টিতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নিউমোনিয়া থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা। সেজন্য মেনে চলতে হবে বেশ কিছু নিয়ম।
কবে জাঁকিয়ে শীত পড়বে, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে হাওয়া অফিস থেকে সাধারণ মানুষ। ডিসেম্বরের শুরুতেও শীতের দেখা নেই একেবারেই। তবে দেরিতে হলেও শীত পড়বে সেটিই স্বাভাবিক। তাই আগে থেকেই সাবধানে থাকাটা জরুরি। কারণ হলো, শীতকালে সুস্থ থাকা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সর্দি-কাশি, জ্বর তো রয়েছেই। সেইসঙ্গে দোসর হয় নিউমোনিয়া। বাড়ির সবথেকে ছোট সদস্য থেকে বয়স্ক সদস্য- নিউমোনিয়ার কবলে পড়তে পারেন। ফুসফুস সংক্রমণের কারণেই মূলত নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। তবে শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে না দেখলে পরে বাড়াবাড়ি আকার ধারণও করতে পারে এই রোগটি। নিউমোনিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হলো অস্বাভাবিক জ্বর। এই জ্বর ক্রমশই বাড়তে থাকায় হলো নিউমোনিয়ার অন্যতম উপসর্গ। সেইসঙ্গে কাশি, বুক ও মাথায় হালকা ব্যথা। এই লক্ষণগুলো দেখলেই অতি দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করাটা জরুরি। তবে তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নিউমোনিয়া থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা। সেজন্য মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম।
# বাইরে থেকে ফিরে হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখতে হবে। নিউমোনিয়া আটকানোর এর চেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় মনে হয় নেই। নিজেও সর্দি-কাশিতে ভুগলে বার বার হাত ধুয়ে নিতে হবে। হাতে কোনও রকম জীবাণুই জমতে দেবেন না। হাত না ধুয়ে কখনও মুখ, চোখ, নাকে হাত দেবেন না। খেতে বসার আগেও ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
# যাদের ঠাণ্ডা লাগার ধাত রয়েছে, শীতে সব সময় গরম পোশাক পরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। খেয়াল রাখুন যাতে কোনওভাবেই ঠাণ্ডা না লাগে। গরম পানি খেতে হবে। রাতে বাইরে বেরোলেও মাথা, কান মাফলারে মুড়িয়ে রাখতে হবে।
# প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। নিজেকে আর্দ্র না রাখলে যে কোনও অসুখই হানা দেবে আপনার শরীরে। সারাদিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি খেতে হবে। গরম পানি খেতে পারেন, তাতে গলাব্যথা হলে স্বস্তি পাবেন।
# স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। শীতকালে বাজারে প্রচুর সবুজ শাক-সব্জি পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিন পাতে সেগুলো রাখুন। ফাইবার, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ খাবার শীতে অন্য রোগের সঙ্গেও ল়ড়াই করার শক্তি জোগায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org