দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাসায়নিক অন্ত্রের তালিকা জমা দিয়েছে সিরিয়া। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই সিরিয়া এ কাজটি করলো।
অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দ্য হেগে রাসায়নিক অস্ত্র নিবারণ সংস্থার তরফ থেকে বলা হচ্ছে, সিরিয়ার কাছ থেকে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাপারে যে তথ্য তারা আশা করছিল, সিরিয়া তা পেশ করেছে। রুশ-মার্কিন চুক্তি অনুযায়ী দামেস্ককে তাদের হাতে থাকা রাসায়নিক অস্ত্রের বিবরণ প্রকাশ করার যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল- তা অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই এ ঘোষণা এলো। সিরিয়ার হাতে প্রায় ১ হাজার টন রাসায়নিক টক্সিন আছে বলে মনে করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের মাঝামাঝির আগে এসব অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলা হবে। রাসায়নিক অস্ত্র নিবারণ সংস্থার বিশেষজ্ঞরা এখন এসব তথ্য যাচাই করে দেখছেন। সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্রের যে তালিকা দিয়েছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা কিনা এখনও তা স্পষ্ট নয়।
ওই খবরে আরও বলা হয়ছে, রাশিয়ার একজন ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা সের্গেই ইভানভ অবশ্য প্রেসিডেন্ট আসাদকে আগে থেকেই যে কোনো চাতুরীর বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছেন। মিস্টার ইভানভ বলেছেন, যদি সিরিয়া এরকম কোনো চাতুর্যের আশ্রয় নেয়, রাশিয়া সিরিয়ার ওপর থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবে। অবস্থাদৃষ্টে স্পষ্টতই মনে হচ্ছে, সিরিয়ার ওপর রাশিয়া যে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত করতে প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ভূমিকার জন্য প্রশংসাও পেয়েছেন। সিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণে বাধ্য করার জন্য রুশ-মার্কিন সমঝোতায় নভেম্বরের মধ্যে সেদেশে অস্ত্র পরিদর্শকদের পাঠানোর কথা ছিল। এরপর ২০১৪ সালের মাঝামাঝি নাগাদ এই অস্ত্র সম্ভার ধ্বংস করার কথা। এ লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিষদে যে প্রস্তাব তোলার কথা হচ্ছে, সেটির ব্যাপারে পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য অবশ্য এখনো একমত হতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং ব্রিটেন চায় সিরিয়া যদি এ ব্যাপারে সহযোগিতা না করে তাহলে যেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে বল প্রয়োগের হুমকি থাকে। তবে রাশিয়া এরকম খোলাখুলি বল প্রয়োগের কথা উল্লেখ করার বিপক্ষে মত দিয়েছে।
অপরদিকে সিরিয়ায় সামরিক হামলার পথ এখনো খোলা রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের উপদেষ্টা বেন রোডস এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সিরিয়া যদি রাসায়নিক অস্ত্র হস্তান্তর বিষয়ক রুশ-মার্কিন সমঝোতা মেনে না চলে তাহলে দেশটির ওপর সামরিক হামলা হতে পারে। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছেন এবং সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘ প্রস্তাবে তিনি সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চাপ সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
তবে শেষ মেষ যায়ই হোক অন্তত যুদ্ধের দামামা কিছু দিনের জন্য হলেও থেমেছে তাতেই বিশ্ববাসীর স্বস্থি। মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশও এখন মনে করছে সিরিয়া জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী তাদের রাসায়নিক অস্ত্র হস্তান্তর করবে। কারণ যুদ্ধ কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনেনি এবং আনতেও পারে না।