দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলেস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যার অভিযোগ এনে গত ডিসেম্বরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের শীর্ষ বিচার আদালত (আইসিজেকে) এ মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ইসরায়েলকে গাজায় হত্যা এবং ধ্বংস বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন এই আদালত।
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপকে গণহত্যা বলে অভিযোগ করে দক্ষিণ আফ্রিকার আনা একটি মামলার অংশ হিসেবে এই নির্দেশ দেওয়া হলো।
তবে গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আন্তর্জাতিক এই আদালত। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা এই বিষয়েও অনুরোধ করেছিলো। নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এই আদেশ গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানো হচ্ছে কিনা সেটি নিয়ে মামলার প্রথম পদক্ষেপ।
তবে এ বছরের জানুয়ারির শুরুতে আদালতে সাক্ষ্য দিলে ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে।
গাজায় গণহত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করা দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দায়ের করা মামলার রায় আসতে কয়েক বছর সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৭ জন বিচারকের একটি প্যানেল হতে আইসিজে-এর আদেশ একটি উপদেষ্টা মতামত যা আদালত দ্বারা প্রয়োগযোগ্য নয়। তবে এটি এখন গুরুত্বপূর্ণ, তার কারণ এটি ৭ অক্টোবরের হামলার জন্য হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযান শুরুর প্রায় ৪ মাস পর গাজায় যুদ্ধবিরতির মতো ইসরায়েলের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়াতেও কাজ করবে।
আদালতের প্রেসিডেন্ট মার্কিন বিচারক জে দোঙ্গু বলেন, আদালত এই অঞ্চলে যে মানবিক ট্র্যাজেডি উদ্ঘাটন করছে সেটি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
গণহত্যামূলক বলে বিবেচিত হতে পারে- এমন যে কোনো কাজ প্রতিরোধে ইসরায়েলকে অবশ্যই সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোনো গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা, শারীরিক কোনো ক্ষতি ঘটানো, কোনো গোষ্ঠীর ধ্বংস ঘটাতে পরিকল্পিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা কিংবা জন্ম রোধ করা, ইত্যাদি গণহত্যামূলক কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে।
ইসরায়েলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, তাদের সামরিক বাহিনী কোনো রকম গণহত্যামূলক কাজ করবে না।
গাজায় গণহত্যার জন্য উসকানি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে- এমন যে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য ইসরায়েলকে অবশ্যই প্রতিরোধ এবং শাস্তি দিতে হবে।
মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।
গণহত্যার মামলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে- এমন প্রমাণের ধ্বংস ইসরায়েলকে অবশ্যই প্রতিরোধও করতে হবে।
ইসরায়েলকে এই আদেশের এক মাসের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
আদালত হামাসের হাতে জিম্মিদের ভাগ্য নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং তাদের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বানও জানিয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org